রাফাহতে ইসরায়েলের আক্রমণে মানবিক বিপর্যয়ের শঙ্কা জার্মানির
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে নির্মূলের লক্ষ্য নিয়ে অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি এই আগ্রাসনে ইতোমধ্যেই ২৮ হাজারেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছে এবং এর জেরে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে দেশটি।
এমন অবস্থায় ফিলিস্তিনের রাফাহ শহরে হামলা চালানোর ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। তবে তাদের এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছে জার্মানি। দেশটি বলছে, রাফাহ শহরে ইসরায়েলি আক্রমণ হবে মানবিক বিপর্যয়।
বিজ্ঞাপন
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক বুধবার বলেছেন, গাজার রাফাহ শহরে ১৩ লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে এবং সেখানে ইসরায়েলি আক্রমণ হবে একটি মানবিক বিপর্যয়।
জেরুজালেমে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতাকালে বেয়ারবক আরও বলেন: ‘১৩ লাখ মানুষ সেখানে খুব ছোট জায়গায় অপেক্ষা করছে। তাদের এই মুহূর্তে যাওয়ার আর কোনও জায়গা নেই... যদি ইসরায়েলি সেনাবাহিনী রাফাহতে আক্রমণ চালায়, তাহলে এই পরিস্থিতিতে এটি মানবিক বিপর্যয় হবে।’
বেয়ারবক বলেন, ফ্রান্স, ওয়াশিংটন এবং ব্রিটেন সহিংস বসতি স্থাপনকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলাকারী চরমপন্থি বসতি স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নকে চাপ দিচ্ছে জার্মানি।
তিনি বলেন, ‘আসুন আমরা একসাথে ইউরোপে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে একমত হই। এর জন্য আমাদের ২৭টি সদস্য রাষ্ট্রের একমত হওয়া প্রয়োজন। জার্মান হিসাবে আমরা এটিকে ইউরোপের দিকে ঠেলে দিয়েছি।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে এই ধরনের কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হলে তা শেনজেন তথা ব্লকের সদস্য রাষ্ট্রগুলোতে জাতীয় ভাবে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হতে পারে বলেও জানান জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক।
এছাড়া স্পেন এবং রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ড ইইউকে বলেছে, বাণিজ্যের সাথে সংযুক্ত অধিকার বিষয়ক চুক্তির অধীনে ইসরায়েল গাজায় তার মানবাধিকারের বাধ্যবাধকতাগুলো মেনে চলছে কিনা তা ‘জরুরিভাবে’ পরীক্ষা করতে হবে।
আরও পড়ুন
ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণের ফলে অন্তত ২৮ হাজার ৫৭৬ জন নিহত হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৬৫ হাজারেরও বেশি মানুষ।
গত বছরের অক্টোবরে আগ্রাসন শুরুর দিনগুলোতে ফিলিস্তিনিদের রাফাহতে আশ্রয় নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল ইসরায়েল। কারণ সেসময় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডটির উত্তরের শহরগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছিল।
আর এবার সেই রাফাহতেও আক্রমণের পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
টিএম