মহাবিপদে নওয়াজ, ২ আসনেই হারছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী?
পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর চলছে ভোটগণনা, সঙ্গে চলছে ফল প্রকাশ। এবারের নির্বাচনে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিএমএল-এন এর প্রধান নেতা নওয়াজ শরিফ বেশ বড় পরীক্ষার মুখে পড়েছেন।
তিনি এবার মোট দুই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এবং অনানুষ্ঠানিক ফলাফল অনুযায়ী, এর মধ্যে একটি আসনে তিনি পরাজয়ের সম্মুখীন হয়েছেন। অন্যটিতেও বড় পরীক্ষার মুখে পড়েছেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)-এর প্রধান নেতা নওয়াজ শরিফ এবারের নির্বাচনে এনএ-১৫, মানসেহরা এবং এনএ-১৩০ লাহোরসহ জাতীয় পরিষদের দুটি আসনেই সত্যিকারের পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছেন বলে মনে হচ্ছে।
দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল বলছে, অসম্পূর্ণ ফলাফলের ভিত্তিতে ও অসমর্থিত প্রতিবেদন অনুসারে, নওয়াজ ইতোমধ্যেই মানসেহরা আসনে পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী গুস্তাসাপ খানের কাছে পরাজয়ের মুখোমুখি হয়েছেন। একইভাবে নিজের শহর লাহোরেও পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ড. ইয়াসমিন রশিদের সঙ্গে নওয়াজ শরিফের কঠোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে।
নিজের পুরো রাজনৈতিক ক্যারিয়ারজুড়ে নওয়াজ শরিফ কখনোই অ্যাবোটাবাদ, মানসেহরা এবং লাহোর অঞ্চলে কখনও পরাজিত হননি। ১৯৮৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে জাতীয় পরিষদের মুলতান আসন থেকে পিপিপি-র সৈয়দ ইউসুফ রাজা গিলানির কাছে তিনি পরাজিত হয়েছিলেন। তবে কঠোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা সত্ত্বেও নওয়াজ শরিফ লাহোরের আসনটি ধরে রাখতে পারবেন বলে তার দল আত্মবিশ্বাসী।
জিও নিউজের লাইভ ইলেকশন ট্রান্সমিশনে সাবেক পিটিআই আইনপ্রণেতা ফয়সাল ভাওদা বলেছেন, করাচিতে একটি ‘আশ্চর্যজনক’ ঘটনা ঘটেছে। সেখানে মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট-পাকিস্তান (এমকিউএম-পি) মহানগরে প্রত্যাশিত আসনের চেয়ে বেশি আসনে এগিয়ে রয়েছে।
তিনি বলেন, পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) যদি স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে বিরোধী দলে বসে তাহলে ৬-৭ মাসের মধ্যে পুরো দেশ ‘ধ্বংস’ হয়ে যাবে।
সংবাদমাধ্যম বলছে, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর গণনা শুরু হয়। এর ১১ ঘণ্টারও বেশি সময় পর স্থানীয় সময় শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টায় প্রথম আসনের ফল ঘোষণা করা হয়। সেই আসনটিতে জয় পায় ইমরানের দল পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী। এরপর আরও কয়েকটি আসনের ফল ঘোষণা করা হয়েছে।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রকাশিত পরিসংখ্যান বলছে, এখন পর্যন্ত প্রকাশিত আনুষ্ঠানিক ফলাফলে ইমরানের দল পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬টি আসনে, নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এন প্রার্থীরা ৫টি আসনে এবং বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টির প্রার্থীরা ৪টি আসনে জয় পেয়েছেন।
আরও পড়ুন
ভাওদা জোর দিয়ে বলেছেন, বেসরকারি সূত্র থেকে এখন পর্যন্ত ঘোষিত ফলাফলে তিনি বিস্মিত নন। তার দাবি, বিভিন্ন টেলিভিশন টক শোতে গত কয়েক মাস ধরে এই একই ভবিষ্যদ্বাণী করছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘গো নওয়াজ গো’ কোনও একক দলের কোনও সুস্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছাড়াই ঘটেছে।
অবশ্য বৃহস্পতিবারের এই নির্বাচনে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) সবচেয়ে বেশি আসন জিতবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। বিশ্লেষকরা বলছেন, ৭৪ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর ওপর সামরিক বাহিনীর আশীর্বাদ রয়েছে।
কিন্তু স্থানীয় টিভি চ্যানেলগুলো বলছে, নওয়াজের এই দলটি নির্বাচনে খারাপ পারফরম্যান্স করেছে।
টিএম