প্রচণ্ড গরম ও গুমোট আবহাওয়ার জন্য ২০২৩ সালকে মনে রাখবেন অনেকে। গত বছর যে গরম পড়েছিল তাতে নাভিশ্বাস উঠেছিল অনেকের। নতুন বছরটিও এমনই হতে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ এ বছরের জানুয়ারি মাসটি ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণতম জানুয়ারির রেকর্ড গড়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের আবহাওয়া সংস্থা সি৩এস বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইতিহাসে (আবহাওয়ার রেকর্ড লিপিবদ্ধ শুরুর পর) এ বছরের জানুয়ারি মাসটি সবচেয়ে উষ্ণ ছিল। এর আগে সবচেয়ে উষ্ণতম মাসের রেকর্ডটি হয়েছিল ২০২০ সালে।

সি৩এসের উপপরিচালক সামান্থা বার্গেস বলেছেন, “শুধুমাত্র গ্রিনহাউজ গ্যাসের নির্গমন দ্রুত কমানোর মাধ্যমেই বৈশ্বিক উষ্ণতা কমানো সম্ভব।”

সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে এ বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত বিশ্বের তাপমাত্রা প্রাক শিল্প যুগের চেয়ে গড়ে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। ইতিহাসে এবারই প্রথমবারের মতো টানা ১২ মাস তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রির সীমার চেয়ে বেশি ছিল।

২০১৫ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে জলবায়ু সম্মেলনে বিশ্বের ২০০টি দেশ তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রির মধ্যে রাখতে সম্মত হয়েছিল। এজন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

ইউরোপের এ আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা এটিকে ‘মানবতার জন্য একটি সতর্কতা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

ঝড়, খরা, দাবানল এবং এল নিনো প্যাটার্নের কারণে গত বছর এত গরম ছিল। এল নিনো প্যাটার্ন হলো আবহাওয়ার একটি বিশেষ অবস্থা। এটির কারণে পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরের পানি উষ্ণ হয়ে যায়। যার প্রভাবে পুরো বিশ্বে গরম পড়ে।

যদিও স্থায়ীভাবে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রির তাপমাত্রার সীমা ভঙ্গ হয়নি। তবে এটি মানবজাতির জন্য বড় একটি সতর্কতা।

কিছু বিজ্ঞানী বলেছেন, প্যারিসে বিশ্বের ২০০টি দেশ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল; সেটি বাস্তব অর্থে পূরণ করা সম্ভব নয়। তবে তা সত্ত্বেও কার্বন ডাই অক্সাইডের নির্গমন কমানোর ব্যবস্থা নিতে দেশগুলোর সরকারকে আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছেন তারা।

কেন ১ দশমিক ৫ ডিগ্রির সীমা লঙ্ঘন হলো?

বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রির সীমা লঙ্ঘনের একমাত্র কারণ হলো মানুষের কর্মকাণ্ড। মূলত জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর কারণে এমনটি হয়েছে। যখন জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ে তখন কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গমন হয়।

এছাড়া এল নিনো প্যাটার্নও দায়ী। যদিও এল নিনোর কারণে সাধারণের চেয়ে তাপমাত্রা ০ দশমিক ২ ডিগ্রি বৃদ্ধি পায়।

সূত্র: আলজাজিরা, বিবিসি

এমটিআই