রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: কৌশল বদলাচ্ছে ইউরোপ?
দুই বছর ধরে ইউক্রেনে অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। ইউরোপ এবং পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে সার্বিকভাবে সাহায্য করলেও রাশিয়াকে সম্পূর্ণভাবে পরাস্ত করা যায়নি। বরং দুই বছর পরেও সমানভাবে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া।
শুধু তা-ই নয়, সামরিক জোট ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত ইউরোপীয় দেশগুলোর আশঙ্কা, এরপর ন্যাটোর অন্য দেশেও আক্রমণ চালাতে পারে রাশিয়া। এই পরিস্থিতিতে কৌশল বদলানো জরুরি বলে মনে করছেন সেনাপ্রধানরা।
বিজ্ঞাপন
গত জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে দুই দিনের বৈঠকে বসেছিলেন ন্যাটোর সেনাপ্রধানরা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, সুইডেনের সেনাপ্রধানরা। ডাচ সেনাপ্রধান জানিয়েছেন, ‘আমরা শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। এটা মাথায় রাখা দরকার।’
নরওয়ের সেনাপ্রধান বলেছেন, রাশিয়া দুই বছর ধরে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। আগামী দুই-তিন বছরের মধ্যে ইউরোপীয় দেশগুলো যদি সামরিক খাতে যথেষ্ট বিনিয়োগ না করে, তাহলে বিপদ আসন্ন।
জার্মানির নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ নিকো ল্যাঞ্জে বলেছেন, সেনাপ্রধানদের বক্তব্য খুব পরিষ্কার। রাজনীতিবিদদের কাছে তাদের আবেদন, সময় নষ্ট করার আর সময় নেই। ইউক্রেনকে অস্ত্র দিয়ে এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে পুতিনের দেশকে যে পরাস্ত করা যায়নি, তা পরিষ্কার।
তিনি জানিয়েছেন, গত বছর ইউক্রেনকে এক মিলিয়ন অর্থাৎ ১০ লাখ শেল দেওয়ার কথা ছিল ইউরোপের। কিন্তু ইউরোপ শেষপর্যন্ত তা দিতে পারেনি। এর অন্যতম কারণ হলো, জার্মানি ওই অর্ডারে স্বাক্ষর করতে দেরি করেছিল।
নিকোর মতে, কেবলমাত্র ইউক্রেন নয়, ন্যাটোর হাতে আধুনিক অস্ত্র থাকা প্রয়োজন। এখনও পর্যন্ত যা যথেষ্ট পরিমাণে নেই।
ড্রোন, যুদ্ধের সাজোয়া গাড়ি এবং শেল ও গুলিতে বিনিয়োগ করতে হবে ন্যাটোর দেশগুলোকে। মনে রাখতে হবে, এতদিন ধরে যুদ্ধ চলার পরেও রাশিয়ার হাতে অস্ত্র এসে পৌঁছাচ্ছে উত্তর কোরিয়া থেকে। সেখান থেকে নিয়মিত গুলি এবং শেল আসছে রাশিয়ায়।
সেই পরিমাণ গুলি এবং শেল ইউরোপে তৈরি হচ্ছে না। ফলে ইউক্রেনকে গুলি হিসেব করে খরচ করতে হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, পাঁচ বছরের মধ্যে সামরিক দিক থেকে ন্যাটো যদি নিজেকে যথেষ্ট আধুনিক করে তুলতে না পারে, তাহলে আগামী দিনে বড় সমস্যা হতে পারে। বস্তুত, অন্য ন্যাটো দেশেও রাশিয়া আক্রমণ চালাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে কেবলমাত্র ইউক্রেনকে সামরিকভাবে সাহায্য করা নয়, ন্যাটোকে নিজেকেও উন্নত করতে হবে। এবং তার জন্য প্রয়োজন বিপুল বিনিয়োগ। ইউরোপীয় রাজনীতিকদের কাছে এই আবেদনই বার বার করছেন সামরিক বিশেষজ্ঞ এবং সেনাপ্রধানরা।
টিএম