এবার মিয়ানমারের আরেক রাজ্যে চৌকির নিয়ন্ত্রণ হারাল জান্তা সৈন্যরা
সহিংসতায় বিধ্বস্ত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পর এবার দেশটির আরেক রাজ্যের দুটি সামরিক চৌকির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বিদ্রোহীরা। এক সপ্তাহেরও কম সময়ের সংঘর্ষের পর দেশটির কাচিন রাজ্যের দুটি সামরিক চৌকি দখল করেছে সেখানকার বিদ্রোহী গোষ্ঠী কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স আর্মি (কেআইএ) ও পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ)।
মঙ্গলবার কেআইএর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কেআইএ ও পিডিএফের যোদ্ধারা কাচিন রাজ্যের হপাকান্ত ও মানসী শহরে সামরিক জান্তার দুটি চৌকির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
কাচিন রাজ্যের স্বাধীনতাকামী সংগঠন কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স অর্গানাইজেশনের (কেআইও) সশস্ত্র শাখা কেআইএর নবম ব্রিগেড ও জাতীয় ঐক্য সরকারের সাথে সংশ্লিষ্ট পিডিএফের যোদ্ধারা গত ২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় হপাকান্ত-কামাইং রোডের লোন খিন শহরের কাছে জান্তার ন্যাম টিন ফাঁড়িতে আক্রমণ শুরু করে। কেআইএ ও পিডিএফের যোদ্ধারা ৩ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় সকাল ১১ টার দিকে ফাঁড়িটির দখল নিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন লোন খিনের বাসিন্দারা।
লোন খিনের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেছেন, কেআইএ এবং প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো সামরিক জান্তার সৈন্যদের বিতাড়িত করেছে। চারদিক থেকে ঘিরে ফেলায় তাদের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। পরে প্রতিরোধ যোদ্ধারা সফলভাবে ফাঁড়ির দখল নিতে সক্ষম হয়।
আরও পড়ুন
কাচিন রাজ্যের হপাকান্তে অবস্থিত ওই ফাঁড়িতে মিয়ানমার জান্তার লাইট ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন (এলআইবি) ১২০ এর সৈন্যরা অবস্থান করেছিল। এর আশপাশে জান্তা বাহিনীর আরও অন্তত তিনটি ফাঁড়ি রয়েছে।
ফাঁড়ি দখলের এই অভিযানে হতাহত হয়েছে কি না সেই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি কেআইএ। তবে স্থানীয় বাসিন্দা ও কেআইএর সূত্রের বরাত দিয়ে থাইল্যান্ড-ভিত্তিক মিয়ানমারের ইংরেজি দৈনিক দ্য ইরাবতি বলেছে, বিদ্রোহীদের সাথে সংঘর্ষে সামরিক জান্তা বাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এ ছাড়া গত ২ ফেব্রুয়ারি কেআইএ ও পিডিএফ সম্মিলিত যোদ্ধারা ভামো জেলার মানসী শহরের বা লাউং দেইন সার গ্রামের কাছে সামরিক জান্তা বাহিনীর আরেকটি ফাঁড়ি দখল করেছে বলে কাচিন-ভিত্তিক গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে।
কেআইএর মুখপাত্র কর্নেল নাও বুর বরাত দিয়ে কাচিনের গণমাধ্যম বলছে, জাতিগত সশস্ত্র এই গোষ্ঠী ও পিডিএফের যোদ্ধারা গত ১ ফেব্রুয়ারি ফাঁড়িতে আক্রমণ করে এবং পরের দিন সকাল ৭ টার দিকে সেটির দখল নেয়।
এদিকে, রাখাইনের ম্রাউক ইউ ও কিয়াকতাও শহরে জান্তা বাহিনীর দুটি ব্যাটালিয়নের সদরদপ্তর দখলে নেওয়ার দাবি করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। বৃহত্তর স্বায়ত্ত্বশাসনের দাবিতে লড়াই করে আসা রাখাইন রাজ্যের এই গোষ্ঠী বলেছে, সেনাবাহিনীর সদরদপ্তর দখলের অভিযানের সময় ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে।
এসএস