দখলদার ইসরায়েলের হামলায় বাস্তুচ্যুত হয়ে আশ্রয় নিয়েছেন এক জায়গায়। সেখান থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে গেছেন আরেক জায়গায়। এভাবে বারবার বাস্তুচ্যুত হয়ে শেষ পর্যন্ত মোহাম্মদ আমের এবং তার পরিবার এখন আশ্রয় নিয়েছে রাফাহর একটি কবরস্থানে। সেখানে তারা এখন মৃতদের সঙ্গে থাকছেন।

রাফাহর এই কবরস্থানে মোহাম্মদ আমেরসহ আরও কয়েকটি পরিবার বসবাস করছে। বালুকাময় বিস্তৃত এই কবরস্থান থেকে দেখা যায় ভূমধ্যসাগর। তারা কবরস্থানে এসেছেন কারণ— অন্য জায়গা থেকে এই স্থানটিকে নিরাপদ মনে হয় তাদের। মূলত এই স্থানটিতে দখলদার ইসরায়েলি সেনারা কোনো বোমা হামলা চালায় না।

মোহাম্মদ আমের বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, “মানুষ নিরাপদ এ স্থানে আসতে বাধ্য হয়েছে। যেটি মৃতদের কবর দেওয়ার একটি স্থান।” আমের গাজার উত্তরাঞ্চলের আল শান্তি শরণার্থী ক্যাম্পে থাকতেন। জীবন বাঁচাতে ছেলে-মেয়ে ও নাতি-নাতনিসহ পরিবারের ১১ সদস্যকে নিয়ে পালিয়ে এদিকে চলে এসেছেন তিনি।

“আবাসিক এলাকায় আমাদের মাথার ওপর ভবন ভেঙে পড়তে পারে। সেখান থেকে এই এলাকা ভালো”। যোগ করেন মোহাম্মদ আমের।

গাজা উপত্যকার প্রায় সব মানুষ এখন রাফাহতে আশ্রয় নিয়েছেন। ইসরায়েল হুমকি দিয়েছে, গাজার খান ইউনিসে তাদের অভিযান শেষ হলে রাফাহতে আক্রমণ চালানো হবে। মিসর সীমান্তবর্তী এই অঞ্চলে এখন সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক কাজ করছে।

যে কবরস্থানটি আমের ও তার পরিবার অবস্থান করছে; সেখানকার বেশিরভাগ কবর যুদ্ধের আগের। কবরগুলোর ওপর দিয়ে বেড়ে উঠেছে লতাপাতা। তবে সেখানে নতুন কবরও আছে। যার মধ্যে অনেকে চলমান এ যুদ্ধে নিহত হয়েছেন।

আমের বলেছেন, “প্রতিদিন সমাহিত করার জন্য এখানে মরদেহ নিয়ে আসা হয়। আমরা তাদের জন্য দোয়া করি এবং তাদের সঙ্গে থাকি এবং তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করি।”

আমের জানিয়েছেন, খাদ্য ও পানির অভাব এবং ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলা তাদের জন্য খুবই ভয়ানক।

তিনি বলেছেন, “মৃতরা আরামে আছে, আমরা যারা বেঁচে আছি তারা কষ্টে আছি এবং খুবই কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি।”

সূত্র: রয়টার্স

এমটিআই