ইরাকে ইরানপন্থী লক্ষ্যবস্তুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশোধমূলক বিমান হামলায় বেসামরিক নাগরিকসহ অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২৫ জন। শনিবার ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানির কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের চালানো হামলাকে ‘‘ইরাকের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে নতুন আগ্রাসন’’ হিসেবে উল্লেখ করে এর নিন্দা জানিয়েছেন মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানি। একই সঙ্গে বাগদাদ সরকারের সাথে সমন্বয় করে ওয়াশিংটন এই হামলা চালিয়েছে বলে যে দাবি করা হয়েছে, তা ‘‘মিথ্যা’’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘এই অঞ্চলে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের উপস্থিতি ইরাকের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকির কারণ হয়ে উঠেছে।’’

এদিকে, একই দিনে ইরানের বিপ্লবী গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) ও তাদের মিত্র মিলিশিয়াদের সাথে সংশ্লিষ্ট ইরাক-সিরিয়ার ৮৫টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে মার্কিন বাহিনী। এই হামলায় সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলেও কমপক্ষে ১৮ ইরানপন্থি যোদ্ধা নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ব্রিটেন-ভিত্তিক সিরিয়ার মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস।

গত সপ্তাহে সিরিয়ার সীমান্তবর্তী জর্ডানের একটি সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলার জবাবে যুক্তরাষ্ট্র ইরাক-সিরিয়ায় এই হামলা চালিয়েছে। প্রাণঘাতী সেই হামলায় ৩ মার্কিন সেনা নিহত এবং আরও ৪০ জনেরও বেশি সেনা আহত হয়েছিলেন। হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র এর আগে ইরান-সমর্থিত বাহিনীকে দায়ী করেছিল।

পরে গত রোববারের ড্রোন হামলায় সৈন্যদের মৃত্যুর প্রতিক্রিয়ায় ওয়াশিংটন থেকে ব্যাপক বিমান হামলার নির্দেশ দেওয়া হয়। মার্কিন সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) এক বিবৃতিতে বলেছে, হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর অভিজাত শাখা কুদস ফোর্স এবং তাদের সংশ্লিষ্ট মিলিশিয়া গোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে আমেরিকান বাহিনী ৮৫টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করেছে। এই হামলায় বহু যুদ্ধবিমান অংশ নিয়েছে, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে উড়ে আসা দূরপাল্লার বোমারু বিমানও রয়েছে।

সেন্টকম বলেছে, ‘‘বিমান হামলায় ১২৫টিরও বেশি নির্ভুল নিশানায় আঘাত হানতে সক্ষম অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। ইরানি বাহিনী ও তাদের সমর্থিত মিলিশিয়াদের যারা মার্কিন বাহিনীর ওপর হামলায় সহায়তা করেছিল তাদের কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার এবং গোয়েন্দা কেন্দ্রের পাশাপাশি রকেট, মিসাইল এবং ড্রোন স্টোরেজ অবকাঠামোতেও হামলা করা হয়েছে।’’

সূত্র: রয়টার্স, এএফপি।

এসএস