দুর্নীতি মামলায় ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেনকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের আর্থিক গোয়েন্দা ও তদন্ত সংস্থা ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট (ইডি)। বুধবার সন্ধ্যায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে পদে থাকা অবস্থায় ভারতের কোনো মুখ্যমন্ত্রীকে এর আগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কি না তাই নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত পদে থাকা অবস্থায় ভারতে কোনো মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। আর যেসব প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা তাদের কার্যকালের মেয়াদ শেষ অথবা পদত্যাগ করার পরে।

হেমন্ত সরেনের আগে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন যারা

এর আগে ভারতে যেসব মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল সেই তালিকায় রয়েছেন বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব ও তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা। এছাড়াও গ্রেপ্তার হয়েছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু, হরিয়ানার ওম প্রকাশ চৌটালা এবং ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মধু কোদা।

যেসব অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তারা

২০১৩ সালে পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতে দোষী সাব্যস্ত হন রাষ্ট্রীয় জনতা দলের প্রধান লালু প্রসাদ যাদব। তিনি ১৯৯০ থেকে ১৯৯৭ সালের মধ্যে দুইবার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। জয়ললিতা ১৯৯১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বেশ কয়েকবার তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৯৬ সালে একটি দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার হন তিনি।

শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় ২০১৩ সালে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওম প্রকাশ। শিক্ষক নিয়োগের মামলায় তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। ২০২২ সালে একটি আর্থিক দুর্নীতির মামলায় তাকে আরও চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

চন্দ্রবাবু নাইডু গত বছর অন্ধ্র প্রদেশ স্টেট স্কিল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। 

মধু কোদা ২০০৬ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২০০৯ সালে তাকে একটি কেলেঙ্কারি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়।

এদিকে জমি দুর্নীতি মামলায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এনডিটিভি ও অন্যান্য ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, বুধবার ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচিতে হেমন্ত সরেনের সরকারি বাসভবনে তাকে প্রায় ৭ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইডির কর্মকর্তারা। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সন্ধ্যার দিকে ঝাড়খণ্ড রাজ্যপালের (গভর্নর) ভবনে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন হেমন্ত। তারপরেই তাকে গ্রেপ্তার করে ইডি।

এমএ