ড্রোন হামলায় মার্কিন সেনাদের মৃত্যু চাপ বাড়াচ্ছে বাইডেনের ওপর
জর্ডানে ড্রোন হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের তিন সেনা নিহত হয়েছেন। হামলায় আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৩৪ জন। সিরিয়া সীমান্তবর্তী জর্ডানের একটি সামরিক ঘাঁটিতে হওয়া এই ড্রোন হামলা ও হতাহতের ঘটনা চাপ বাড়াচ্ছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ওপর।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ হিসেবে তার ওপর এই চাপ বাড়ছে। সোমবার (২৯ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিন মার্কিন সেনার মৃত্যু এবং আরও অনেকের আহত হওয়ার ঘটনা এখন মার্কিন কমান্ডার-ইন-চিফ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে। ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর শত্রুর আক্রমণে এই প্রথম আমেরিকান সেনারা নিহত হলেন।
বিবিসি বলছে, উত্তেজনার এই তীক্ষ্ণ বৃদ্ধি অনিবার্যই ছিল বলে মনে হয়। গত বছরের অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে ইরাক ও সিরিয়ায় মার্কিন সামরিক স্থাপনাগুলো বারবার ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়াদের আক্রমণের শিকার হয়েছে। আর এসব আক্রমণে ক্রমবর্ধমান সংখ্যক মার্কিন সৈন্য আহত হয়েছেন।
যদিও যুক্তরাষ্ট্র বারবার উভয় দেশের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়ে প্রতিশোধ নিয়েছে। তবে এবার আমেরিকাকে বিবেচনা করতে হবে, তারা ইরানকেই এই হামলার জন্য দায়ী করবে কিনা। উত্তেজনার এই বৃদ্ধি মূলত উল্লেখযোগ্য ঝুঁকিতে পরিপূর্ণ।
অবশ্য ড্রোন হামলায় ৩ মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার পর প্রতিশোধের হুংকার দিয়েছেন বাইডেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের অস্পষ্ট প্রথম সেই সতর্কবাণীতে বলা হয়েছে, ‘আমরা কোনও এক সময়ে এবং আমাদের পছন্দের পদ্ধতিতে দায়ী সকলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনব।’
তবে যুক্তরাষ্ট্র জানে, তাকে এখন তার সেনাদের জীবন রক্ষা করার জন্য আরও কিছু করতে হবে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সমালোচকরা এই সংকটকে কাজে লাগিয়ে তাকে আবারও ‘ইরানের প্রতি নরম’ বলে অভিযুক্ত করবেন।
ওয়াশিংটন এবং তেহরান উভয়ই দীর্ঘদিন ধরে শত্রুতায় আবদ্ধ। তবে তারা বর্তমান এই উত্তেজনার মধ্যেও সরাসরি সংঘর্ষ এড়িয়ে গেছে।
ইরান তার অভ্যন্তরীণ চাপের মধ্যেও সিনিয়র রেভোলিউশনারি গার্ড কমান্ডারদের হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে ইসরায়েলি বা আমেরিকান স্থাপনাগুলোতে নিজস্ব হামলা চালানো থেকে বিরত রয়েছে। যদিও ইরান এসব হামলা ও হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে থাকে।
আরও পড়ুন
এই মাসের শুরুর দিকে প্রথম সরাসরি কোনও জবাবে ইরাকের কুর্দিস্তানে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের একটি ঘাঁটিতে হামলা চালায় ইরান। যদিও এটিকে ইরানের জন্য ‘নরম লক্ষ্য’ হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছিল।
এছাড়া যুক্তরাজ্য এবং অন্য আরও কিছু দেশের সমর্থন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই ইয়েমেনের হুথিদের বিরুদ্ধে অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছে। কিন্তু ইরান-সমর্থিত শক্তিশালী সেই সশস্ত্র গোষ্ঠীও লোহিত সাগরের অতিপ্রয়োজনীয় রুটে জাহাজের ওপর হামলা বন্ধ করেনি।
এখন যুক্তরাষ্ট্রকে ইরান-সমর্থিত অন্য গোষ্ঠীগুলোরও মোকাবিলা করতে হবে। সেটিও আবার এমনভাবে যা আমেরিকার স্বার্থ রক্ষা করবে, কিন্তু একইসঙ্গে সেটি যেন অস্থির এই অঞ্চলটিকে অন্য কোনও বিপজ্জনক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে না দেয়।
টিএম