ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্য হওয়ার স্বপ্নে বাগড়া দিচ্ছে স্লোভাকিয়া
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগ দিতে চায় ইউক্রেন। তবে ইউক্রেন যেন ন্যাটোতে যোগ না দিতে পারে, সেই নিশ্চয়তা বরাবরই আদায় করার চেষ্টা করেছে রাশিয়া। মূলত ইউক্রেন প্রসঙ্গে রাশিয়া ও পশ্চিমা দেশগুলোর মাঝে উত্তেজনার অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হচ্ছে ন্যাটো।
তবে ন্যাটোর ভেতরেও রয়েছে ইউক্রেনের বিরোধী। আর তাই তো, স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদের আবেদনে ভেটো দেওয়ার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। রোববার (২১ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্তো ফিকো চলতি সপ্তাহে কিয়েভ সফরের আগে ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদ পাওয়ার ক্ষেত্রে তার দেশের বিরোধিতার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বলেছেন, তিনি এই (ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য করার) পদক্ষেপে ভেটো দেবেন। একইসঙ্গে ইউক্রেনকে তিনি বিশ্বের ‘সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন এবং দেশটির সামগ্রিক ‘প্রভাব’ যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ফিকো শনিবার পাবলিক ব্রডকাস্টার আরভিটিএসকে বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সম্পূর্ণ প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ইউক্রেন।’
স্লোভাকিয়ার এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী বুধবার তিনি কিয়েভ যাবেন এবং ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্যামিহালের সাথে দেখা করবেন। তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, ‘আমি তাকে বলব- আমি ন্যাটোতে ইউক্রেনের সদস্য হওয়ার বিপক্ষে এবং আমি ভেটো দেব।’
ফিকোর বিশ্বাস, ‘এই ধরনের পদক্ষেপ কেবলমাত্র তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভিত্তি হবে, অন্য কোনও কিছু নয়।’
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। এরপর একই বছরের সেপ্টেম্বরে রাশিয়ার সঙ্গে চারটি ইউক্রেনীয় প্রদেশকে সংযুক্ত করে মস্কো। আর এরপর ইউক্রেন আনুষ্ঠানিকভাবে দ্রুতগতিতে ন্যাটো সদস্যপদ পেতে আবেদন জমা দেয়।
তবে ন্যাটোর ইউক্রেনীয় মিত্ররা এই ইস্যুতে বিভক্ত বলে মনে হচ্ছে। কারণ কয়েকটি দেশ যে যুক্তি সামনে আনছে তাতে বলা হচ্ছে, যুদ্ধের মাঝখানে নতুন কোনও সদস্য যোগ করা কোনও অগ্রাধিকার হতে পারে না।
এছাড়া স্লোভাকিয়ান প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের কোনও সামরিক সমাধান নেই। তার ভাষায়, ‘(সংকট সমাধানে) কিছু আপস করতে হবে, যা উভয় পক্ষের জন্য খুবই বেদনাদায়ক হবে।’
আরও পড়ুন
ফিকো ইউক্রেনকে ‘বিশ্বের অন্যতম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ’ বলেও অভিযুক্ত করেছেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের সেপ্টেম্বরের শেষে স্লোভাকিয়ায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়লাভ করে রাশিয়াপন্থি দল স্মেয়ার-এসএসডি পার্টি। আর এরপরই রবার্ট ফিকোর নেতৃত্বাধীন এই দলটি অবিলম্বে ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা বন্ধের ঘোষণাও দিয়ে দেয়।
দলটির নির্বাচনে জয়ের পর বিবিসি বলেছিল, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সর্বাত্মক আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। এরপর থেকে কিয়েভের বেশ বড় সমর্থক হিসেবে জোরালো ভূমিকা রেখে আসছে স্লোভাকিয়া। তবে নির্বাচনে জয় পাওয়া মস্কোপন্থি দল স্মেয়ার-এসএসডি পার্টি ইউক্রেনে অবিলম্বে সামরিক সহায়তা বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
টিএম