ইউক্রেনের রুশ-নিয়ন্ত্রিত শহর দোনেৎস্কে ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ২৭ জন নিহত হয়েছেন। রুশ-নিয়ন্ত্রিত এই শহরের একটি বাজারে হওয়া এই হামলাকে ‘ভয়ঙ্কর’ বলে অভিহিত করেছেন সেখানকার এক কর্মকর্তা।

হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সোমবার (২২ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুশ-নিয়ন্ত্রিত শহর দোনেৎস্কে গোলাবর্ষণ ও হামলায় অন্তত ২৭ জন নিহত হয়েছেন বলে ওই অঞ্চলের মস্কো-নিযুক্ত নেতা ডেনিস পুশিলিন জানিয়েছেন। শহরের একটি ব্যস্ত বাজারে হওয়া এই হামলাকে তিনি ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন, হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

ওই অঞ্চলে কর্মরত ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর একটি দল বলেছে, তারা এই হামলা চালায়নি। তবে হামলার জন্য ইউক্রেনকে দায়ী করেছেন ডেনিস পুশিলিন। এছাড়া তাৎক্ষণিকভাবে হামলাস্থলের চারপাশের পরিস্থিতি যাচাই করতে সক্ষম হয়নি বিবিসি নিউজ।

বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রকাশিত বেশ কিছু ছবিতে হামলার জেরে ধ্বংসপ্রাপ্ত দোকান, সেইসাথে রাস্তায় পড়ে থাকা মৃতদেহ দেখানো হয়েছে।

আরেক বার্তাসংস্থা এএফপির মতে, তাতিয়ানা নামে একজন স্থানীয় বাসিন্দা স্থানীয় মিডিয়াকে বলেছেন- তিনি ওপর থেকে একটি আসা প্রজেক্টাইল বা মিসাইলের শব্দ শুনেছেন এবং পরে তিনি বাজারে তার স্টলের নিচে লুকিয়ে পড়েন।

তাকে উদ্ধৃত করে আরও বলা হয়েছে, ‘আমি ধোঁয়া দেখেছি, লোকেরা চিৎকার করছিল, একজন নারী কাঁদছিলেন।

এদিকে ফেসবুকে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর অংশ তাভরিয়া ইউনিট বলেছে, তাদের বাহিনী ‘এই যুদ্ধ অভিযানে জড়িত ছিল না’। এতে আরও বলা হয়েছে: ‘দোনেৎস্ক ইউক্রেনের! ইউক্রেনীয়দের প্রাণহানির জন্য রাশিয়াকে জবাবদিহি করতে হবে।’

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই হামলাকে ‘রাশিয়ার শান্তিপূর্ণ জনগণের বিরুদ্ধে ইউক্রেনীয় বাহিনীর বর্বর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ বলে অভিহিত করেছে। তারা আরও বলেছে, ‘পশ্চিমা দেশগুলোর সরবরাহকৃত অস্ত্র ব্যবহার করে এই হামলা করা হয়েছে’।

দোনেৎস্ক শহর এবং পূর্ব ইউক্রেনের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের কিছু অংশ প্রথমবার ২০১৪ সালে রাশিয়ান-সমর্থিত বাহিনী দখল করে নিয়েছিল এবং তখন থেকেই এলাকাটি আংশিকভাবে মস্কোর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

আর হামলার শিকার শহরটি ফ্রন্টলাইন থেকে প্রায় ২০ কিমি (১২ মাইল) দূরে। মারিঙ্কা এবং আভিডিভকাসহ দোনেৎস্ক শহরের কাছাকাছি অঞ্চলগুলোও ভয়ঙ্কর লড়াই প্রত্যক্ষ করেছে।

উল্লেখ্য, রাশিয়া ইউক্রেনে তার পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন শুরু করার পর প্রায় দুই বছর হয়ে গেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সেখানে সামান্য অগ্রগতি অর্জন করেছে রাশিয়া।

শনিবার তারা উত্তর-পূর্ব ইউক্রেনের খারকিভ অঞ্চলের ক্রোখমালনে গ্রাম দখল করেছে বলে দাবি করেছে। ইউক্রেনের একজন সামরিক মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন, তাদের বাহিনী ওই এলাকা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে তিনি বলেছেন, এই অঞ্চলটির সামরিক গুরুত্ব খুব কম ছিল।

এর কয়েকদিন আগে মস্কোও দাবি করেছিল, তারা দোনেৎস্কে ভেসেলে নামে একটি বসতির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। কিয়েভ অবশ্য রাশিয়ার সেই দাবি নিশ্চিত করেনি।

টিএম