গণতন্ত্রের জন্য বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছেন দেশটির কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য ও পররাষ্ট্রবিষয়ক হাউস কমিটির চেয়ারম্যান গ্রেগরি ডব্লিউ মিকস। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারের বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে দেওয়া বিবৃতির প্রতি সমর্থন জানিয়ে মঙ্গলবার এই মন্তব্য করেছেন তিনি।

গ্রেগরি ডব্লিউ মিকস বলেছেন, ‘‘বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। আমি সহিংসতার ঘটনা ও ভোটকে অবমূল্যায়নের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি করার বিষয়ে (মার্কিন) পররাষ্ট্র দপ্তর তদন্তের যে আহ্বান জানিয়েছে, তার প্রতি সমর্থন জানাই।’’

এক্সে তিনি লিখেছেন, ‘‘বাংলাদেশের জনগণের গণতন্ত্রের প্রতি আকাঙ্ক্ষায় অব্যাহতভাবে সমর্থন দিয়ে যাবে যুক্তরাষ্ট্র।’’

নিউইয়র্ক থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য গ্রেগরি মিকস যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রখ্যাত আইনজীবীও। ১৯৯৮ সাল থেকে ডেমোক্রেটিক পার্টির নির্বাচিত প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যও তিনি। ২০২১ থেকে প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

এর আগে, গত ৮ জানুয়ারি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, বাংলাদেশে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচন ‘‘অবাধ কিংবা সুষ্ঠু হয়নি।’’ বিবৃতিতে তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অন্যান্য পর্যবেক্ষকদের মতামতের সাথে অভিন্ন মত পোষণ করে যে, ‘‘এই নির্বাচন অবাধ বা সুষ্ঠু ছিল না। আমরা দুঃখিত যে, সব দল এতে অংশগ্রহণ করেনি। বিরোধী দলের হাজার হাজার রাজনৈতিক কর্মীকে গ্রেপ্তার এবং নির্বাচনের দিনের অনিয়মের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন।’’

মিলার আরও বলেন, ‘‘যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনের সময় এবং এর পূর্ববর্তী মাসগুলোতে সংঘটিত সহিংসতার নিন্দা জানায়। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে সহিংসতার ঘটনা বিশ্বাসযোগ্যভাবে তদন্ত এবং অপরাধীদের জবাবদিহি করতে উৎসাহিত করছি। আমরা সব রাজনৈতিক দলকে সহিংসতা না করার আহ্বান জানাই।’’

মার্কিন সরকার বলেছে, গত বছরের অক্টোবর থেকে তারা বাংলাদেশের নির্বাচনী ঘটনাপ্রবাহকে ‘‘নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ’’ করছে। ওই বছরের মে মাসে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বাংলাদেশের অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যের প্রতি সমর্থন জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও জাতীয়তা আইনের ২১২(এ)(৩)(সি) (৩সি) ধারার আওতায় নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেন।

অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনে বাধাদানকারী ও সহিংসতায় জড়িতদের বিরুদ্ধে নতুন এই ভিসানীতি প্রয়োগ করা হবে বলে জানায় ওয়াশিংটন। অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছিলেন, এই নীতির আওতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে শনাক্ত যেকোনও বাংলাদেশির বিরুদ্ধে মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করবে। গত বছরের ৩ মে বাংলাদেশ সরকারকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানায় মার্কিন সরকার।

এসএস