ইসরায়েলি বাহিনীর গত প্রায় তিন মাসের অভিযানে গাজা উপত্যকায় যত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে স্কুলগামী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪ হাজার ১১৯ জন। সেই সঙ্গে আহত হয়েছে অন্তত ৭ হাজার ৫৩৬ জন শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ক্ষমতাসীন সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি নিহত হয়েছেন স্কুলশিক্ষক এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারী বা স্টাফরাও। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন ২২১ জন স্কুলশিক্ষক এবং স্টাফ। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩০০ জন।

এছাড়া ইসরায়েলি বাহিনীর গোলা ও বোমাবর্ষণে গাজা উপত্যকায় ধ্বংস হয়েছে ৩৪৩টি স্কুল।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্তে হামাস যোদ্ধারা অতর্কিত হামলা চালানোর পর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী। ২৮ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থলবাহিনীও।

ইসরায়েলি বাহিনীর টানা দেড় মাসের অভিযানে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা, নিহত হয়েছেন ২২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। এই নিহতদের ৭০ শতাংশই নারী, শিশু, অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরী এবং বয়স্ক লোকজন।

আহত হয়েছেন আরও ৫৪ হাজার ৯৬৮ জন এবং এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ৭ হাজার জন।। এছাড়া হাজার হাজার পরিবার বাড়িঘর-সহায় সম্বল হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বিভিন্ন স্কুল, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল প্রাঙ্গণে।

অন্যদিকে, হামাসের গত ৭ অক্টোবরের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক। পাশাপাশি, ইসরায়েলের ভূখণ্ড থেকে ২৪২ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিককে সেদিন জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যান হামাস যোদ্ধারা। তাদের মধ্যে এখনও মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছেন শতাধিক জিম্মি।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, হামাসকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করার আগ পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি অভিযান চলবে। হামাসের হাইকমান্ড জানিয়েছে, তারা দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত।

ফিলিস্তিনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, গাজায় টানা গোলাবর্ষণের পাশাপাশি গত প্রায় তিন মাসের বিভিন্ন সময়ে পশ্চিম তীরের বিভিন্ন এলাকাতেও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। সেসব হামলায় এ পর্যন্ত পশ্চিম তীরে নিহত হয়েছে ৩৮ জন এবং আহত হয়েছে ২৮২ স্কুলশিক্ষার্থী।

এছাড়া ইসরায়েলি বাহিনীর গোলাবর্ষণে পশ্চিম তীরের বিভিন্ন শহরে অন্তত ৩৮ টি স্কুল ধ্বংস হয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে মন্ত্রণালয়।

সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি।

এসএমডব্লিউ