ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা দিল্লির রাস্তায় চলাচল করছেন মানুষ। বুধবারের ছবি

ঘন কুয়াশার চাদরে আজও ঢাকা পড়েছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালেও দিল্লির বেশ কিছু অংশ ঘন কুয়াশার চাদর ঢেকে আছে। যার ফলে দৃশ্যমানতা কমে গেছে অনেকটা।

এতে করে ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে সড়ক ও রেলপথে চলাচল। আর ঘন কুয়াশার জেরে বুধবারের মতো বৃহস্পতিবারও শতাধিক ফ্লাইট চলাচল বিলম্বিত হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে পারদ ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যাওয়ার পর দিল্লি এবং এর আশপাশের অঞ্চল ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে এবং এরই জেরে ১৩৪টি ফ্লাইট ও ২২টি ট্রেন চলাচল বিলম্বিত হয়েছে।

ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা এবং পাঞ্জাবে ঘন কুয়াশা পড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে।

এনডিটিভি বলছে, বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৫টায় দিল্লির সাফদারজং মানমন্দিরে দৃশ্যমানতা ৫০ মিটারে নেমে আসে। আর দিল্লি বিমানবন্দরের কাছে পালাম মানমন্দির দৃশ্যমানতা ২৫ মিটারে নেমে আসার কথা জানিয়েছে।

এছাড়া পাঞ্জাব, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ এবং উত্তর প্রদেশে দৃশ্যমানতা ৫০ থেকে ২৫ মিটারের মধ্যে ছিল। কুয়াশার চাদর পাঞ্জাব থেকে পূর্ব উত্তর প্রদেশ পর্যন্ত হরিয়ানা-দিল্লি, পশ্চিম উত্তর প্রদেশ, উত্তর রাজস্থান এবং উত্তর মধ্যপ্রদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

এদিকে উত্তর ভারতজুড়ে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা অব্যাহত থাকায় উত্তর প্রদেশের বেশ কয়েকটি শহরের স্কুল ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) জানিয়েছে, ‘উত্তরপ্রদেশের কিছু অংশে এবং হরিয়ানা, চণ্ডীগড় ও দিল্লি, দক্ষিণ-পশ্চিম রাজস্থান এবং উত্তর মধ্য প্রদেশের বিচ্ছিন্ন কিছু এলাকায় ঘন থেকে খুব ঘন কুয়াশা (০-২৫ মিটার) পড়তে পারে।’

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, উত্তর ভারতের রাজ্যগুলোতে নববর্ষের আগের দিন পর্যন্ত গভীর রাত এবং সকালে ‘খুব ঘন কুয়াশা’ পড়তে পারে। যদিও দিল্লির কিছু এলাকায় বুধবারের তুলনায় আজ সকালে দৃশ্যমানতা কিছুটা ভালো ছিল। তবে এনসিআর অঞ্চলে কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া বিরাজ করছে।

আইএমডি আরও বলেছে, ‘কুয়াশা আরও ঘন হয়ে উঠতে পারে এবং উত্তর প্রদেশ ও উত্তর রাজস্থানের আরও কিছু অংশ ও উত্তর মধ্যপ্রদেশের কিছু অংশে তা প্রসারিত হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি।’

এই পরিস্থিতিতে রাস্তায় চলাচলরত যাত্রীদের সতর্ক থাকতে এবং গাড়ি চালানোর সময় কুয়াশা আলো (ফগ লাইট) ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি।

শৈত্যপ্রবাহের পরিস্থিতি অব্যাহত থাকায় দিল্লিতে বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। তবে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

এর আগে বুধবার দিল্লি বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ মিলিয়ে মোট ১১৫টি বিমানের ওঠানামায় বিলম্ব হয়। বিরূপ এই আবহাওয়ার প্রভাব পড়ে দূরপাল্লার ট্রেনগুলোর ওপরও। কুয়াশার কারণে দিল্লি থেকে ২৫টি দূরপাল্লার ট্রেনও দেরিতে ছাড়ে এদিন।

এতে করে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে যাত্রীদের।

টিএম