ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ (ফাইল ছবি)

ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা আড়াই মাস ধরে চালানো এই হামলায় নিহত হয়েছেন ২০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

বর্বর এই আগ্রাসনের জেরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ক্ষোভ। এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের বেশ কড়া সমালোচনা করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তিনি বলেছেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করা মানে গাজাকে গুঁড়িয়ে দেওয়া বা  মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া নয়।

বার্তাসংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার অর্থ ‘গাজাকে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া’ নয় বলে বুধবার বলেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। সম্প্রচারমাধ্যম ফ্রান্স ৫-কে তিনি বলেছেন, ‘আমরা এই ধারণাটিকে প্রতিষ্ঠিত হতে দিতে পারি না যে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কার্যকর লড়াইয়ের অর্থ গাজাকে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া বা বেসামরিক জনগণকে নির্বিচারে আক্রমণ করা বোঝায়।’

আর তাই তিনি ইসরায়েলকে এই ধরনের হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তার মতে, ‘এটি উপযুক্ত নয়। কারণ সমস্ত জীবনের মূল্য একই এবং আমরা এটিকে সমর্থন করি’।

‘ইসরায়েলের আত্মরক্ষা এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার অধিকার’ স্বীকার করে ম্যাক্রোঁ বলেন, গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা এবং শেষ পর্যন্ত ‘মানবিক বিরতির মাধ্যমে যুদ্ধবিরতির দিকে এগিয়ে যাওয়ার’ আহ্বান জানিয়েছে ফ্রান্স।

এর আগে গত নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে গাজা উপত্যকায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। সেসময় তিনি বলেন, ইসরায়েলকে অবশ্যই গাজায় বোমা হামলা বন্ধ করতে হবে এবং বেসামরিক মানুষ হত্যা বন্ধ করতে হবে।

সেসময় তিনি আরও বলেন, গাজায় বোমা হামলার কোনও যুক্তি নেই এবং সেখানে যুদ্ধবিরতি হলে ইসরায়েল উপকৃত হবে।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস বুধবার জানিয়েছে, উপত্যকাটিতে চলমান ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে ২০ হাজার ছাড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে অন্তত ৮ হাজার শিশু এবং ৬ হাজার ২০০ নারী।

এছাড়া নিহতদের মধ্যে ৩১০ জন চিকিৎসক, ৩৫ জন বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মী এবং ৯৭ জন সাংবাদিক রয়েছেন। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

টিএম