মালিতে আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে। দীর্ঘ ১০ বছর পর দেশটিতে এই মিশনের সমাপ্তি হলো। শান্তিরক্ষা মিশনের মুখপাত্র বলেছেন, মালির সামরিক সরকারের আদেশে কার্যক্রমে সমাপ্তি টানা হয়েছে।
এর আগে চলতি বছরের জুনে শান্তিরক্ষার দায়িত্বে থাকা সব শান্তিরক্ষীকে প্রত্যাহার করে নিতে বলে মালির সরকার। সোমবার (১২ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মালিতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনটি মাল্টিডাইমেনশনাল ইন্টিগ্রেটেড স্ট্যাবিলাইজেশন মিশন ইন মালি (মিনুজমা) নামে পরিচিত। রাজধানী বামাকোতে মিশনটির সদর দপ্তরে জাতিসংঘের পতাকা অর্ধনমিত করা হয়েছে বলে সোমবার এর মুখপাত্র ফাতুমাতা কাবা বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন।
মূলত প্রতীকী এই পদক্ষেপেই শান্তিরক্ষা মিশনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তিকে চিহ্নিত করছে। ফাতুমাতা কাবা বলেন, মিশনের এখনও কিছু উপাদান সেখানে রয়েছে। আগামী বছরের ১ জানুয়ারির পরে ‘কার্যক্রম পুরোপুরি গুটিয়ে ফেলার’ পদক্ষেপ কার্যকর হবে, যেখানে কর্তৃপক্ষের কাছে অবশিষ্ট যন্ত্রপাতি হস্তান্তরের মতো কার্যক্রমও রয়েছে।
এর আগে চলতি বছরের জুন মাসে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের অংশ হিসেবে আফ্রিকার দেশ মালিতে অবস্থানরত ১৫ হাজারেরও বেশি সেনাসদস্যকে প্রত্যাহার করে নিতে বলে মালির সামরিক সরকার। শান্তিরক্ষার দায়িত্বে থাকা এসব শান্তিরক্ষীর মধ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রায় দেড় হাজার সদস্যও ছিলেন।
দেশটি সেসময় দাবি করে, শান্তিরক্ষীদের ‘শান্তি রক্ষার’ যে কাজে মোতায়েন করা হয়েছিল সেটি ‘ব্যর্থ’ হয়েছে। ফলে ‘কোনও বিলম্ব ছাড়া’ তাদের মালি ছাড়তে হবে।
এরপর গত আগস্টে মালিতে দশকব্যাপী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অবদান রাখা দেশগুলো তাদের সেনা সরিয়ে নিতে শুরু করে।
আরও পড়ুন
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে সশস্ত্র দল তুরেগের উত্থান ঠেকাতে ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে মালিতে মিশন শুরু করে জাতিসংঘ। ফ্রান্সের নেতৃত্বাধীন সামরিক অভিযানে সশস্ত্র দল তুরেগ মালির উত্তরাঞ্চলের শহরগুলো থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়।
তবে এ দলটি মরুভূমিতে পুনর্গঠিত হয়ে মালির সেনাবাহিনী ও তাদের মিত্রদের ওপর হামলা চালানো শুরু করে।
নিরাপত্তাহীনতা বাড়তে থাকায় দেশটিতে ২০২০ ও ২০২১ সালে পরপর দুটি অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির বর্তমান সরকার জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী, ফ্রান্সের সেনা ও এর মিত্রদের সঙ্গে বিবাদে লিপ্ত হয়। এছাড়া শান্তিরক্ষীদের কার্যক্রমের ওপর বিভিন্ন বাধা-বিপত্তিও তৈরি করে তারা।
টিএম