ইসরায়েলগামী সব জাহাজে হামলার হুমকি হুথিদের
ইসরায়েলগামী সব জাহাজে হামলার হুমকি দিয়েছে ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথি। একইসঙ্গে ইসরায়েলি বন্দরগুলোতে যাওয়া এবং সেখানে কর্মকাণ্ড পরিচালনার বিরুদ্ধে সমস্ত আন্তর্জাতিক শিপিং কোম্পানিকে সতর্কও করেছে গোষ্ঠীটি।
এর আগে চলতি মাসেই ইসরায়েলে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত এই বিদ্রোহীরা। শনিবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয়তা যেটাই হোক না কেন ইসরায়েলগামী সকল জাহাজকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হবে বলে শনিবার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে ইয়েমেনের হুথি আন্দোলন। একইসঙ্গে ইসরায়েলি বন্দরগুলোতে যাওয়া ও সেখানে কর্মকাণ্ড পরিচালনার বিরুদ্ধে সমস্ত আন্তর্জাতিক শিপিং কোম্পানিকে সতর্কও করেছে গোষ্ঠীটি।
টানা দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজায় আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল এবং তাদের এই বর্বর হামলার মধ্যেই ইরান-সমর্থিত এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটি হুঁশিয়ারি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
রয়টার্স বলছে, হুথিরা লোহিত সাগর এবং ওই সাগরের বাব আল-মান্দেব প্রণালীতে ইসরায়েলি-সংযুক্ত বেশ কয়েকটি জাহাজ আক্রমণ চালানোর পাশাপশি জব্দও করেছে। এই সমুদ্রপথ দিয়ে বিশ্বের বেশিরভাগ তেলবাহী জাহাজ যাতায়াত করে থাকে। এছাড়া হামাসের সঙ্গে সংঘাত শুরুর পর ইসরায়েলে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং সশস্ত্র ড্রোন নিক্ষেপও করেছে হুথিরা।
হুথি কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের কর্মকাণ্ড ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থনের প্রদর্শন। অন্যদিকে ইসরায়েল বলেছে, জাহাজে হামলা ‘ইরানের সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড’ এবং এটি আন্তর্জাতিক সমুদ্র নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
হুথি গেষ্ঠিীর একজন সামরিক মুখপাত্র বলেছেন, লোহিত সাগর এবং আরব সাগর থেকে সকল জাহাজকে ইসরায়েলি বন্দরগুলোর দিকে যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘যদি গাজা তার প্রয়োজনীয় খাদ্য ও ওষুধ না পায়, তাহলে লোহিত সাগরে ইসরায়েলি বন্দরগুলোর দিকে যাওয়া সমস্ত জাহাজ তাদের জাতীয়তা নির্বিশেষে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে।’
তাৎক্ষণিকভাবে এই আদেশ কার্যকর হবে বলেও বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
এর আগে গত সপ্তাহে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় ইলাত শহরের কয়েকটি সামরিক চৌকিতে একের পর এক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে হুথি গোষ্ঠী। তবে ওই হামলায় ইসরায়েলে কোনও ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহত হয়েছে কি না তাৎক্ষণিকভাবে তা পরিষ্কার হওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন
অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা সেসময় জানান, বুধবার ইয়েমেনের হুথি নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল থেকে ছোড়া একটি ড্রোনে গুলি চালিয়ে ভূপাতিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের আরলে বার্ক ডেস্ট্রয়ার। তবে এতে কোনও ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহত হয়নি। এছাড়া ড্রোনটির লক্ষ্যবস্তুও পরিষ্কার ছিল না।
মূলত গত ৭ অক্টোবর হামাস-ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত দক্ষিণ লোহিত সাগরে ষষ্ঠবারের মতো ড্রোনে গুলি চালিয়েছে মার্কিন নৌবাহিনী। মধ্যপ্রাচ্যের জলসীমায় ইসরায়েলি কয়েকটি বাণিজ্যিক জাহাজে সাম্প্রতিক একের পর এক হামলার মাঝেই গত সপ্তাহে ওই হামলার ঘটনা ঘটে।
এছাড়া গত রোববার ইয়েমেনের এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী ওই অঞ্চলে দুটি ইসরায়েলি জাহাজে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দাবি করে। ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে মুসলিম বিশ্বকে পাশে দাঁড়ানোর আহ্বানে সাড়া দিয়ে তারা এই হামলা চালিয়েছে বলে সেসময় জানানো হয়।
টিএম