ইরাকের রাজধানী বাগদাদে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস লক্ষ্য করে পর পর ৭টি মর্টার শেল ছোড়া হয়েছে। শুক্রবার ভোরের দিকে সংঘটিত এই হামলাকে বাগদাদের মার্কিন দূতাবাসে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় হামলা বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।

হামলায় অবশ্য এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এর আগে ইরাকের বিভিন্ন মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে হামলা হলেও এবারই প্রথম দূতাবাস লক্ষ্য করে হামলা ঘটল।

ইরাকে মার্কিন দূতাবাসের কার্যালয়টি রাজধানী বাগদাদের কেন্দ্রে অবস্থিত। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, শুক্রবার স্থানীয় সময় ভোর ৪ টার দিকে দূতাবাসের কাছাকাছি প্রথম মর্টার শেলটি এসে পড়ে। তারপর দূতাবাসের ভেতরে ও বাইরে আরও ৬ টি শেল আঘাত হানে।

প্রথম মর্টার শেলটি আঘাত হানার পরপরই দূতাবাস কর্মীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা আরও জানিয়েছে, মার্কিন দূতাবাসের পাশাপাশি এই দিন ইরাকের নিরাপত্তা বাহিনীর কার্যালয়েও হামলা হয়েছে। তবে সেখানেও হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

এখন পর্যন্ত হামলার দায় কোনো গোষ্ঠী স্বীকার করেনি; তবে ইরাক ও যুক্তরাষ্ট্রের তদন্ত কর্মকর্তাদের অনুমান— ইরান সমর্থিত কাতাইব হিজবুল্লাহ কিংবা হারকাত হিজবুল্লাহ আল নুজাবা— এই দুই গোষ্ঠীর কোনো একটি এই হামলার জন্য দায়ী। দু’টি গোষ্ঠীই বিশ্বের বৃহত্তম সশস্ত্র ইসলামিক রাজনৈতিক গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর শাখা এবং বর্তমানে ইরাকে ব্যাপক সক্রিয়।

এদিকে শুক্রবার দূতাবাসে হামলার পর ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহামেদ শিয়া আল সুদানিকে টেলিফোন করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন। ফোনালাপে তিনি এই হামলার তীব্র নিন্দা জানানোর পাশপাশি হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানান।

জবাবে আল সুদানি বলেন, ইরাকের নিরাপত্তা সংস্থা ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করে দিয়েছে।

উল্লেখ্য, ইসরায়েল হামাস যুদ্ধ বাঁধার পর থেকে সিরিয়া ও ইরাকের মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলো লক্ষ্য করে নিয়মিত হামলা চালাচ্ছে ইরাকে সক্রিয় বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী। এসব গোষ্ঠীর প্রায় সবই ইরানের সহায়তাপুষ্ট। মার্কিন প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদরদপ্তর পেন্টানগনের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৭ অক্টোবরের পর থেকে এ পর্যন্ত ইরাক ও সিরিয়ার বিভিন্ন মার্কিন ঘাঁটিতে মোট ৮৪টি ছোটো বড় হামলার ঘটনা ঘটেছে।

এসব হামলার প্রতিক্রিয়ায় গত নভেম্বরের শেষ দিক থেকে ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোকে লক্ষ্য করে বিমান অভিযান শুরু করে মার্কিন বাহিনী। সেসব অভিযানে ইরাকে এ পর্যন্ত ১৫ জন এবং সিরিয়ায় ৭ যোদ্ধা নিহত হয়েছেন।

ইরাকের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটিতে বর্তমান অবস্থান করছেন প্রায় ২ হাজার ৫০০ মার্কিন সেনা। মূলত আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) মাথাচাড়া দেওয়া রুখতেই ইরাকে রয়েছেন এই মার্কিন সেনারা।

রয়টার্স

এসএমডব্লিউ