গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি গণহত্যায় পশ্চিমারা সহায়তা করছে বলে অভিযোগ করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। বৃহস্পতিবার মস্কোতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে বৈঠকের শুরুতে এই অভিযোগ করেন তিনি।

মধ্যপ্রাচ্যে হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ক্রেমলিনে বৃহস্পতিবার রুশ প্রেসিডেন্টের সাথে বৈঠক করেছেন ইব্রাহিম রাইসি। মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সৌদি আরব সফরের একদিন পর রাইসির সাথে ওই বৈঠক করেছেন পুতিন। দুবাই-রিয়াদে বৈঠকে গাজা ও ইউক্রেনের যুদ্ধ এবং তেলের দাম বাড়াতে রাশিয়া ও ওপেকের প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা করেন পুতিন।

টেলিভিশনে সম্প্রচারিত উদ্বোধনী বক্তৃতায় কোনও নেতাই তাদের দেশের ক্রমবর্ধমান সামরিক সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেননি। ইরান-রাশিয়ার সামরিক সহযোগিতা নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগে থেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। ওয়াশিংটন বলছে, রাশিয়াকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার জন্য অস্ত্র সরবরাহ করছে ইরান।

রাইসির সাথে বৈঠকে পুতিন বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্য, বিশেষ করে ফিলিস্তিনি অঞ্চলের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় অনুবাদকের সহায়তা রাইসি বলেন, ‘‘ফিলিস্তিন ও গাজায় যা ঘটছে তা অবশ্যই গণহত্যা এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।’’ তিনি বলেন, এটা ‘‘আরও দুঃখজনক’’ যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমারা এই গণহত্যায় সমর্থন করছে।

গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে আসছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। গাজার ক্ষমতাসীন এই গোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক রয়েছে। অন্যদিকে, হামাস এবং ইসরায়েলসহ ওই অঞ্চলের অন্যান্য গোষ্ঠীর সাথে সম্পর্ক রয়েছে রাশিয়ার। যুদ্ধ শুরুর পর অক্টোবরে মস্কোতে হামাসের একটি প্রতিনিধিদলের বৈঠকের আয়োজন ঘিরে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল পশ্চিমারা।

পুতিন বলেছেন, গাজার যন্ত্রণায় কাতর ও রক্তাক্ত শিশুদের দেখে ‘‘চোখে পানি আসে’’। পুতিনের এই মন্তব্যকে পশ্চিমারা ভণ্ডামি বলে অভিহিত করে বলছেন, পুতিনের সামরিক বাহিনী ইউক্রেনে হাজার হাজার বেসামরিক মানুষকে হত্যা করেছে।

রাশিয়া ও আরব দেশগুলো বলছে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনে ইসরায়েলের বোমাবর্ষণ ও গাজা অবরোধকে সমর্থন জানিয়ে পশ্চিমারা দ্বৈত নীতি প্রদর্শন করছে।

এর আগে ইসরায়েল বলেছিল, গণহত্যার অভিযোগ অত্যন্ত দুখঃজনক। তাদের সব পদক্ষেপ বেসামরিকদের নয়, বরং হামাসকে লক্ষ্য করে নেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ক্রেমলিনে ইব্রাহিম রাইসির সঙ্গে বৈঠকে পুতিনের পাশাপাশি রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু, উপপ্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাকও উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস