ভারতের বেসরকারি হাসাপাতাল গ্রুপ অ্যাপোলোর বিরুদ্ধে ওঠা কিডনি কেনাবেচার অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ব্রিটেনের দৈনিক টেলিগ্রাফে এ বিষয়ক বিস্তৃত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের ৩ দিনের মধ্যে এই পদক্ষেপ নিলো ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।

বুধবার ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠান দ্য ন্যাশনাল অর্গান অ্যান্ড টিস্যু ট্রান্সপ্ল্যান্ট অর্গানাইজেশন (নটো) দিল্লি রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব এস বি দীপক কুমার বরাবর দেওয়া এক চিঠিতে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।  

চিঠিতে এই অভিযোগ পরীক্ষা নীরিক্ষার পাশপাশি যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং তারপর একটি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দিল্লির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবকে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দিতে হবে সেই প্রতিবেদন।

বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এসব তথ্য। চিঠিটির একটি অনুলিপি রয়টার্সের কাছে রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ভারতের শীর্ষ এবং বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বেসরকারি হাসপাতালের গ্রুপ অ্যাপোলোর বিরুদ্ধে কিডনি পাচার ও ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠেছে। গত শনিবার ৩ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের দৈনিক টেলিগ্রাফে প্রকাশিত একটি বিস্তৃত অনুসন্ধানী প্রতিবেদেনে প্রথমবারের মতো অ্যাপোলোর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে।

অ্যাপোলো মূলত একটি বহুজাতিক চেইন হাসপাতাল। ভারতের রাজধানী দিল্লিসহ বিভিন্ন প্রদেশ, এমনকি বাইরের বিভিন্ন দেশেও এই হাসপাতালটির শাখা রয়েছে।

নিজেদের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে টেলিগ্রাফ বলেছে, অ্যাপোলো গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত দিল্লির ইন্দ্রপ্রস্থ মেডিকেল কর্পোরেশন লিমিটেড (আইসিএমএল) অবৈধ কিডনি কেনাবেচার সঙ্গে যুক্ত এবং হাসপাতালটিতে গড়ে প্রতি বছর ১ হাজার ২০০টিরও বেশি কিডনি কেনাবেচা হয়। এছাড়া চোরাই পথে ভারত ও ভারতের বাইরেও পাঠানো হয় কিডনি।

টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমারের গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র লোকজনের শরীর থেকে সংগ্রহ করা হয় এসব কিডনি। এ সময় তাদেরকে কিছু অর্থ প্রদান করা হয়। তারপর সংগৃহীত সেসব কিডনি দেশি বিদেশি বায়ারদের কাছে উচ্চমূল্যে বিক্রি করা হয়।

অ্যাপোলো এবং আইসিএমএল অবশ্য মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনকে ‘সর্বৈব মিথ্যা, ভুল তথ্যে পরিপূর্ণ এবং উদ্যেশ্যপ্রণোদিত’ বলে উল্লেখ করেছে। তবে এ ব্যাপারে মিয়ানমারের সরকার থেকে কোনো বক্তব্য-বিবৃতি এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, ভারতসহ বিশ্বের সব দেশে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ক্রয়-বিক্রিয় আইনত নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।

রয়টার্স

এসএমডব্লিউ