গাজা উপত্যকার রাফাহতে ইসরায়েলি বোমা হামলায় নিহত এক শিশুকে জড়িয়ে ধরে আছেন এক ফিলিস্তিনি নারী। গত ২১ অক্টোবরের ছবি

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় নিহতের সংখ্যা ১৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই প্রায় ১২ হাজার।

এছাড়া টানা প্রায় দুই মাস ধরে চলা এই আগ্রাসনে আহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় ৪৪ হাজারে। বুধবার (৬ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ১৬ হাজার ২৪৮ জনে পৌঁছেছে বলে অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডটির সরকারি মিডিয়া অফিস মঙ্গলবার জানিয়েছে।

অফিসটি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৭ হাজার ১১২ জন শিশু এবং ৪ হাজার ৮৮৫ জন নারী রয়েছেন। এছাড়া ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৪৩ হাজার ৬১৬ জন।’

গাজার এই মিডিয়া অফিসের মতে, ভূখণ্ডটিতে এখনও প্রায় ৭ হাজার ৬০০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। তারা হয় ধ্বংস হয়ে যাওয়া ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে আছেন বা তাদের ভাগ্য ঠিক কী ঘটেছে তা এখনও অজানা।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

মাঝে হামাসের সাথে এক সপ্তাহব্যাপী মানবিক বিরতির পর গত শুক্রবার থেকে গাজা উপত্যকায় পুনরায় বিমান ও স্থল হামলা শুরু করে ইসরায়েল। বিরতির পর শুরু হওয়া এই অভিযানে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরকে লক্ষ্য করেই মূলত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার সেনারা।

এই পরিস্থিতিতে গাজা উপত্যকায় নির্বিচার হামলা এবং বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর পরিকল্পিত গণহত্যা চালানোর অভিযোগ তুলে ইসরায়েলের তীব্র সমালোচনা করেছেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি।

তিনি বলেছেন, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নিরীহ ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে গণহত্যা চালাচ্ছে। শিগগিরই গাজায় পূর্ণাঙ্গ ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার দোহায় উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের (জিসিসি) শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তৃতায় ইসরায়েলের কঠোর সমালোচনা করে কাতারের আমির বলেন, ‘ইসরায়েলের দখলদার বাহিনী সব ধরনের রাজনৈতিক, নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধ লঙ্ঘন করেছে।’

তিনি বলেন, ‘নিরীহ নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যমূলক গণহত্যার ঘটনার মতো এই জঘন্য অপরাধ অব্যাহত রাখার সুযোগ দেওয়াটা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য লজ্জাজনক।’

টিএম