ভোটে কারচুপি: জিম্বাবুয়ে-উগান্ডার ওপর মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা
আফ্রিকা মহাদেশের দুই দেশ জিম্বাবুয়ে ও উগান্ডার বিরুদ্ধে ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। নির্বাচনে কারচুপি ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার পাশাপাশি দমনপীড়নের দায়ে দেশ দুটির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এই বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
অবশ্য যারা এই বিধিনিষেধের আওতায় পড়েছেন, তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র সোমবার উগান্ডার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞার নীতি আরও প্রসারিত করেছে। উগান্ডায় গণতন্ত্রকে ক্ষুণ্ন করার পাশাপাশি প্রান্তিক গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে দমনপীড়ন চালানোর জন্য দায়ী কর্মকর্তাদের এই নীতির আওতায় আনা হয়েছে।
একইসঙ্গে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে জিম্বাবুয়ের কর্মকর্তাদের জন্যও নতুন ভিসা বিধিনিষেধ নীতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন এই ভিসা বিধিনিষেধ ঘোষণা করেছেন এবং উগান্ডায় এলজিবিটি সম্প্রদায়সহ জিম্বাবুয়েতে নাগরিক সমাজের কর্মীদের মতো গোষ্ঠীগুলোর ওপর দমনপীড়নের কথা উল্লেখ করেছেন। অবশ্য ব্লিংকেনের বিবৃতিতে কোনও কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করা হয়নি।
রয়টার্স বলছে, উগান্ডার এলজিবিটিকিউ-বিরোধী আইনকে বিশ্বের সবচেয়ে কঠোর আইন হিসাবে বিবেচনা করা হয়। চলতি বছরের মে মাসে পূর্ব আফ্রিকার এই দেশটিতে এই আইন কার্যকর হয় এবং ‘সমকামিতার জন্য মৃত্যুদণ্ডের’ মতো শাস্তিও এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
অবশ্য আইনটি পাস হওয়ার পর গত জুন মাসে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর উগান্ডার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।
এছাড়া মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট এর আগেও ২০২১ সালে উগান্ডায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পরে দেশটির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল। সেই নির্বাচনকে ‘ত্রুটিপূর্ণ’ বলে অভিহিত করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন সোমবার বলেন, ‘উগান্ডার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে দুর্বল করার জন্য বা প্রান্তিক বা দুর্বল জনগোষ্ঠীর সদস্যদের দমন করার লক্ষ্যে প্রণীত নীতি বা পদক্ষেপের জন্য দায়ী বা জড়িত উগান্ডার বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা বা অন্যদের অন্তর্ভুক্ত করে ভিসা বিধিনিষেধ নীতির সম্প্রসারণ ঘোষণা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘(নিপীড়িত) এই গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে পরিবেশ কর্মী, মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক, এলজিবিটিকিউ প্লাস ব্যক্তি এবং সুশীল সমাজের সংগঠকও রয়েছেন।’
এছাড়া আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলীয় দেশ জিম্বাবুয়েতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে দুর্বল করার পেছনে দায়ীদের বিরুদ্ধেও নতুন ভিসা বিধিনিষেধ ঘোষণা করেন অ্যান্টনি ব্লিংকেন।
রয়টার্স বলছে, জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট এমারসন মানাঙ্গাগওয়া চলতি বছরের আগস্টে বিতর্কিত ভোটে দ্বিতীয় মেয়াদে জয়লাভ করেন। নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা এই নির্বাচনের সমালোচনা করেছেন এবং বিরোধীরা এটিকে ‘বিশাল জালিয়াতি’ হিসাবে বর্ণনা করে বলেছে, এই নির্বাচন আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক মান পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্লিংকেন বলেন, ‘গত আগস্টের নির্বাচনের আগে, নির্বাচন চলাকলীন এবং ভোটের পরে যারাই জিম্বাবুয়ের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করেছে, তারা এই নীতির অধীনে মার্কিন ভিসার জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারে।’
টিএম