মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ভব ঠাকরে

অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকা করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু ঠেকাতে ১৫ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্র। মঙ্গলবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ভব ঠাকরে এক ঘোষণায় এই তথ্য জানিয়েছেন।

নতুন বিধিনিষেধ অনুযায়ী বুধবার (১৪ এপ্রিল) থেকে ১৪৪ ধারা চলবে মহারাষ্ট্রজুড়ে। অর্থাৎ একসঙ্গে ৪ জনের বেশি ব্যক্তি চলাচল করতে পারবেন না। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবাদানকারী সংস্থা, প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট ছাড়া অন্য সবকিছু বন্ধ থাকবে। হাসপাতাল, ব্যাংক, সংবাদমাধ্যম অফিস, ই কমার্স ও জ্বালানী সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সকাল ৭ টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।

শপিং সেন্টার ও মল, বিনোদন কেন্দ্র, হোটেল-রেস্তোঁরা আগামী ১৫ দিন সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। সিনেমার শুটিংয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। সমুদ্রতীর ও অন্যান্য জনসমাগমপূর্ণ স্থানগুলোতে যেতেও জনগণকে নিষেধ করা হয়েছে।

ঘোষণায় উদ্ভব ঠাকরে জানিয়েছেন, যেসব প্রতিষ্ঠান, সংস্থা ও দোকানপাট খোলা থাকবে, সেখানে কর্মরত ও সেবা নিতে আসা ব্যক্তিদের অবশ্যই করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। যদি কেউ এই বিধিনিষেধ অমাণ্য করেন, সেক্ষেত্রে তাকে গুনতে হবে জরিমানা।

ভাষণে উদ্ভব ঠাকরে বলেন, ‘ যুদ্ধ আবারও শুরু হয়েছে, এখন আমাদের অ্যাকশনে নামার সময়। নতুন যে নিয়মগুলো চালু করা হলো— আমি একে লকডাউন বলতে চাই না, বরং একে বলা যায় কঠোর বিধিনিষেধ। আমি জানি, সাধারণ জনগণের জন্য রুটি-রুজি রোজগার করা কতখানি গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু জীবনের গুরুত্ব তার চেয়েও বেশি।’

ভারতে গত মার্চের মাঝামাঝি থেকে ব্যাপকভাবে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু। এই তালিকায় দেশটির ২৭ টি রাজ্যের মধ্যে বর্তমানে শীর্ষে আছে মহারাষ্ট্র। মঙ্গলবার রাজ্যটিতে করোনায় আক্রান্ত নতুন রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে ৬০ হাজার ২১২ তে এবং এইদিন দেশটিতে মারা গেছেন ২৮১ জন।

ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, করোনা আক্রান্ত রোগীদের চাপে মহারাষ্ট্রের হাসপাতালগুলোতে নতুন রোগী নেওয়ার মতো অবস্থা নেই। যেসব রোগী বর্তমানে সেখানে ভর্তি আছেন, অক্সিজেন ও প্রয়োজনীয় ওষুধের অভাবে তাদের ঠিকমতো চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

ভাষণে এই বিষয়টি উল্লেখ করে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেন ও  প্রয়োজনীয় ওষুধপত্রের সংকট চলছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ, মহারাষ্ট্রে অতিদ্রুত অক্সিজেন ও ওষুধ পাঠান। আমার প্রস্তাব, সেগুলো সড়কপথে না পাঠিয়ে সামরিক বাহিনীর মাধ্যমে আকাশ পথে যেন পাঠানো হয়।’

করোনায় দৈনিক সংক্রমণের হিসেবে বিশ্বের দেশগুলোতে বর্তমানে শীর্ষে আছে ভারত। গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে দেশটিতে প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। মঙ্গলবার ভারতে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৮৫ হাজার ২৪৮ জন।

সূত্র: বিবিসি, এনডিটিভি

এসএমডব্লিউ