অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামাসের সাথে ইসরায়েলের প্রথম দফার চারদিনের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ অতিরিক্ত দু’দিনের জন্য বাড়ানো হয়েছে | ছবি: সংগৃহীত

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামাসের সাথে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ অতিরিক্ত দু’দিনের জন্য বাড়ানো হয়েছে। সোমবার কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা গাজায় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বৃদ্ধির চুক্তির এই ঘোষণা দিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বার্তায় কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মাজেদ আল-আনসারি হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, গাজা উপত্যকায় মানবিক যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর চুক্তি হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চলমান মধ্যস্থতার অংশ হিসেবে গাজা উপত্যকায় মানবিক যুদ্ধবিরতি অতিরিক্ত দু’দিনের জন্য বাড়ানোর একটি চুক্তি হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, মঙ্গলবার এবং বুধবার ১০ জন করে— মোট ২০ জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। এর বিনিময়ে দু’দিনে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দী থাকা ৬০ ফিলিস্তিনি মুক্তি পাবেন।

কাতারের ঘোষণার কিছুক্ষণ পরই চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির তথ্য জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীনগোষ্ঠী হামাস। এতে বলা হয়েছে, কাতার এবং মিসরের মধ্যস্থতায় ইসরায়েলের সাথে সাময়িক যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। তবে চুক্তির শর্ত একই রয়েছে।

এর আগে, মিসর, কাতার এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাকারীরা গাজায় চারদিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে হামাস-ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের সাথে দফায় দফায় আলোচনা করেন। সোমবার প্রথম দফার চারদিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তি শেষ হওয়ার আগে এই চুক্তি হতে পারে বলে মিসরের সরকারি একটি সূত্র ইঙ্গিত দিয়েছিল। গত সাত সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলা হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের অবসানে ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক চাপের মাঝে চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে।

রোববার চার বছর বয়সী ইসরায়েলি-আমেরিকান এক মেয়ে শিশুসহ ১৭ জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। এর মধ্য দিয়ে গত শুক্রবার থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৫৮ জিম্মি হামাসের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছেন। একই দিন ৩৯ ফিলিস্তিনিকে ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। চুক্তির আওতায় ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনির সংখ্যা ১১৭ জনে পৌঁছেছে।

বর্তমান চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, হামাস গাজায় জিম্মি করে রাখা মোট ৫০ ইসরায়েলি নারী ও শিশুকে মুক্তি দেবে। সেই হিসেবে সোমবার আরও ১১ জনকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে হামাসের। তবে কতজন বিদেশি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হতে পারে সেই বিষয়ে চুক্তিতে কোনও শর্ত নেই।

সোমবার ইসরায়েলের সরকারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, গাজায় এখনও বন্দী মোট জিম্মির সংখ্যা ১৮৪। যার মধ্যে ১৪ জন বিদেশি এবং ৮০ জনের দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে।

ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলার প্রতিশোধে গাজার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাসকে ধ্বংস করার অঙ্গীকার করে গত ৭ অক্টোবর উপত্যকায় হামলা শুরু করে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। একই দিন ইসরায়েল থেকে ধরে নিয়ে গাজায় ২৪০ জনকে জিম্মি করে রাখে হামাস। ইসরায়েলি হামলায় গাজা উপত্যকায় এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটেছে। আর হামাসের হামলায় ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন এক হাজার ২০০ জন; যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।

সূত্র: আলজাজিরা, টাইমস অব ইসরায়েল।

এসএস