চারদিনের যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয়দিনে আজ শনিবার (২৫ নভেম্বর) ১৪ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের। তবে মুক্তির বিষয়টি এখন হুমকির মুখে পড়ে গেছে। কারণ হামাস শর্ত দিয়েছে, গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েল যতক্ষণ পর্যন্ত ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করতে না দেবে— ততক্ষণ পর্যন্ত জিম্মিদের মুক্তি দেবে না তারা।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

গতকাল শুক্রবার ইসরায়েলের সঙ্গে হামাসের চারদিনের যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। বিরতির প্রথমদিন তারা ১৩ ইসরায়েলিসহ ২৪ জিম্মিকে মুক্তি দেয়। আজ আরও ১৪ জনকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল তাদের। তবে হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসেম বিগ্রেডস শনিবার নতুন ঘোষণায় জানিয়েছে, জিম্মিদের ফিরিয়ে নিতে হলে গাজার উত্তরাঞ্চলেও ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করতে দিতে হবে।

তবে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, হামাসের সামরিক শাখার এ ঘোষণা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। কারণ হামাসের রাজনৈতিক শাখার এক কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, জিম্মিদের মুক্তির প্রক্রিয়া চলছে।

গাজার উত্তরাঞ্চলে ত্রাণ প্রবেশের শর্তজুড়ে দিয়ে আল-কাসেম ব্রিগেডস বলেছে, ‘জিম্মিদের মুক্তি ততক্ষণ বিলম্ব হবে যতক্ষণ দখলদার (ইসরায়েলি) বাহিনী উত্তরাঞ্চলে ত্রাণ প্রবেশের চুক্তির শর্ত না মানছে। এছাড়া ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির ব্যাপারে যে চুক্তি হয়েছে সেটি ইসরায়েলিরা না মানায় জিম্মিদের মুক্তি বিলম্ব হচ্ছে বলেও জানিয়েছে আল-কাসেম ব্রিগেডস।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল দাবি করেছে, হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের চুক্তি হয়েছিল প্রতিদিন গাজায় ২০০টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। সেই শর্ত মেনে শনিবার ২০০টি ট্রাক প্রবেশ করতে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া উত্তরাঞ্চলেও পাঠানো হয়েছে ৫০টি ত্রাণবাহী ট্রাক। তবে হামাস দাবি করেছে, ইসরায়েল সেই শর্ত মানেনি।

এর আগে হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা তাহের আল-নোনো কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে বলেছিলেন, ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির ব্যাপারে দুই পক্ষের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে, সেটি মানছে না ইসরায়েলিরা। তিনি অভিযোগ করেছেন, হামাস যেভাবে বা যাদের মুক্তির কথা বলেছিল, ইসরায়েল এটি সেভাবে করছে না।’

তবে আল-কাসেম ব্রিগেডস এমন শর্ত দেওয়ার আগে হামাসের এক কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছিলেন, ‘আল-কাসেমের সদস্যরা ইসরায়েলি জিম্মিদের খান ইউনিস থেকে রেডক্রসের হাতে তুলে দিচ্ছে। জিম্মির সংখ্যা ১৪।’

তবে শেষ পর্যন্ত জিম্মিরা মুক্তি পায় নাকি এখন সেটিই দেখার বিষয়।

সূত্র: বিবিসি, টাইমস অব ইসরায়েল

এমটিআই