আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও নিজ দেশের নাগরিকদের চাপে চার দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেও গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার প্রশ্নে এখনও অনড় আছে ইসরায়েল। মধ্যপ্রাচ্যের এই ভূখণ্ডটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত জানিয়েছেন, উপত্যকায় অন্তত আরও দু’মাস অভিযান চালাবে ইসরায়েলি বাহিনী।

শুক্রবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) এক অনুষ্ঠানে গ্যালান্ত বলেন, ‘এটা একেবারেই সংক্ষিপ্ত একটি বিরতি। এই বিরতি শেষের পর ফের আমরা আরও দৃঢ়ভাবে যুদ্ধে ফিরে আসব। শত্রুদের হাতে থাকা সব জিম্মিকে আমরা উদ্ধার করব।’

‘আমি আশা করছি, আরও অন্তত দু’মাস এই যুদ্ধ আমাদের চালিয়ে যেতে হবে।’

গত ৭ অক্টোবর ভোরে ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। উপত্যকার উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্ত বেড়া ভেঙে ইসরায়েলে প্রবেশ করে নির্বিচারে সামরিক-বেসামরিক লোকজনকে হত্যা করে তারা। সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে যায় ২৪২ জনকে।

হামাসের এই হামলার জবাবে ওই দিন ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। ১৬ অক্টোবর থেকে সেই অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।

ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৪ হাজার। আর গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন।

নভেম্বরের মাঝামাঝি কাতার ও মিসরের মধ্যেমে ইসরায়েলের কাছে একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছিল গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রনকারী গোষ্ঠী হামাস।

প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, যদি ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় চার দিনের যুদ্ধবিরতি, কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি, উপত্যকায় ত্রাণপণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে প্রবেশ এবং আহত বেসামরিকদের উপত্যকার বাইরে গিয়ে চিকিৎসা গ্রহণের অনুমতি দেয়— তাহলে নিজেদের হাতে থাকা জিম্মিদের মধ্যে ৫০ জনকে হামাস মুক্তি দেবে।

শুরুতে মেনে না নিলেও গত ২১ নভেম্বর হামাসের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবটি অনুমোদন করে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা। সেই অনুযায়ী আজ শুক্রবার স্থানীয় সময় ৭টা (বাংলাদেশ সময় বেলা ১১ টা) থেকে শুরু হয়েছে এই যুদ্ধবিরতি।

এদিকে বৃহস্পতিবার এক ব্রিফিংয়ে আইডিএফের মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, যুদ্ধবিরতির চার দিন অভিযান না চালালেও গাজার বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করবে ইসরায়েলের স্থল বাহিনীর সদস্যরা।

সূত্র : সিএনএন

এসএমডব্লিউ