ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় হামাস ও ইসরায়েলি বাহিনীর যুদ্ধের দেড় মাস পেরোনোর পর এই প্রথম সমঝোতায় পৌঁছানোর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে দু’পক্ষের মধ্যে। হামাসের চেয়ারম্যান ও রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসরমাইল হানিয়ে জানিয়েছেন, দু-পক্ষই একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের কাছাকাছি পর্যায়ে পৌঁছেছে।

কী কী শর্ত অন্তর্ভুক্ত হতে পারে সম্ভাব্য সেই সমঝোতায়, তা এখনও চুড়ান্ত না হলেও হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা ইজ্জত আল রিশক এ সম্পর্কিত কিছু ইঙ্গিত দিয়েছেন কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে।

ইজ্জত আল রিশক বলেন, সম্ভাব্য সমঝোতা চুক্তিতে গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা, ত্রাণ ও সহায়তা পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে প্রবেশ করতে দেওয়া এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য বাইরের দেশে পাঠানোর মতো শর্তগুলো অন্তর্ভুক্ত করতে চায় হামাস।

সম্ভাব্য এই সমঝোতায় ইসরায়েলের মূল মনযোগ হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্তির বিষয়টিতে। এই ইস্যুতে আগের অবস্থান ধরে রেখেছে হামাস। আর সেই অবস্থান হলো— ইসরায়েল যদি তাদের কারাগারে বন্দি হামাসের নেতাকর্মী ও ফিলিস্তিনিদের ছেড়ে দেয়, তাহলে হামাসও জিম্মিদের মুক্ত করবে।

আল রিশক আরও বলেন, কাতারের মধ্যস্থতায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইসরালের সরকারের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তিতে পৌঁছানোর ব্যাপারে আলাপ আলোচনা চলছিল; কিন্তু ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনঞ্জামিন নেতানিয়াহু জেদ করেছিলেন— হামাসের সর্বস্তরে এবং ফিলিস্তিনের সব প্রতিবাদী পক্ষের সঙ্গে যেন এই ইস্যুতে আলোচনা ও তাদের মতামত জানতে চাওয়া হয়। তাই খানিকটা বিলম্ব হয়েছে।

ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ১২ তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সোমবার ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন বিশেষ মন্ত্রিসভার বৈঠকে হামাসের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে এবং মন্ত্রিসভার সদস্যরা এ ইস্যুতে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা অতর্কিত হামলা চালানোর পর ওই দিন থেকেই উপত্যকায় অভিযান পরিচালনা করছে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী। অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে এ অভিযানে যোগ দিয়েছে স্থল বাহিনীও।

অন্যদিকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ১৩ হাজার ৩০০ জনে। আর গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন।

স্থল বাহিনী অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন ইসরায়েলের সেনা বাহিনীর ৬৮ জন সদস্য। এছাড়া এই যুদ্ধের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫০ জন সাংবাদিক।

আলজাজিরা

এসএমডব্লিউ