অবরুদ্ধ গাজার উপত্যকার বৃহত্তম আল-শিফা হাসপাতালের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। ইসরায়েলি বাহিনীর এক ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতাল থেকে রোগীদের চলে যাওয়ার আল্টিমেটামের পর এখন সেটি জনমানবহীন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই হাসপাতালের ইনকিউবেটরে কয়েক ডজন শিশুসহ মুমূর্ষু শত শত রোগী ছিলেন। তারা এখন হাসপাতালের চত্বরে এবং করিডোরে পড়ে আছেন। অনেকে তীব্র যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন।

কাতার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার সাথে আলাপকালে আল-শিফার পরিচালক মোহাম্মদ আবু সালমিয়া বলেন, তিনিসহ অল্প কয়েকজন স্টাফ ও রোগী বর্তমানে হাসপাতালে আছেন। বাকিরা হাসপাতাল থেকে চলে গেছেন।

তিনি বলেন, হাসপাতালটি এখন পুরোপুরি জনশূন্য হয়ে পড়েছে। রোগী ও ভুক্তভোগীদের কেউ কেউ করিডোরে শুয়ে আছেন। হাসপাতালের মূল কেন্দ্র ইসরায়েলি সেনারা ঘেরাও করেছেন। এই হাসপাতালের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ এখন তাদের হাতে। এমনকি হাসপাতালে থেকে যাওয়া একেবারে অল্প কয়েকজন চিকিৎসাকর্মীসহ আমরা এই মুহূর্তে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারছি না।

মোহাম্মদ আবু সালমিয়া বলেন, রোগীদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের মধ্যে সদ্যজাত শিশু ও কিডনি রোগীও রয়েছেন। সরিয়ে নেওয়া না হলে শিগগিরই তারা মারা যাবেন। হাসপাতালের খাবারও ফুরিয়ে যাচ্ছে।

আল-শিফা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক ওমর জাকৌত বলেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আল-শিফা হাসপাতালের— চিকিৎসক, রোগী এবং বাস্তুচ্যুত মানুষসহ সবাইকে আল-ওয়েহদা সড়ক দিয়ে এক ঘণ্টার মধ্যে মেডিকেল ভবন খালি করার নির্দেশ দিয়েছে।

যদিও ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হাসপাতাল খালি করার নির্দেশ অস্বীকার করে বলেছে, তারা হাসপাতালের পরিচালকের এক অনুরোধে সাড়া দিয়েছেন। হাসপাতালের পরিচালক সেখান থেকে চলে যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের নিরাপদ পথ তৈরি করে দিতে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর কাছে অনুরোধ করেছেন। রোগীদের স্থানান্তরের ব্যবস্থা করতে সেনাবাহিনী প্রস্তুত আছে বলে হাসপাতালের চিকিৎসকদের জানিয়ে দিয়েছে সৈন্যরা।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মুনির আল-বারশ বলেছেন, প্রায় ৪৫০ জন রোগীকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে হাসপাতালে ১২০ জনের মতো রোগী এখনও আছেন। তাদের চিকিৎসার জন্য পাঁচজন চিকিৎসক ও কয়েকজন রয়েছেন। এই রোগীরা মুমূর্ষু অবস্থায় রয়েছেন।

সূত্র: আলজাজিরা, রয়টার্স।

এসএস