ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর যুদ্ধাপরাধের এবং উপত্যকার সার্বিক পরিস্থিতির তদন্ত চেয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) আবেদন করেছে বাংলাদেশসহ ৫টি দেশ। অন্য দেশগুলো হলো দক্ষিণ আফ্রিকা, বলিভিয়া, কমোরোস এবং জিবুতি।

শুক্রবার আইসিসির জ্যেষ্ঠ প্রসিকিউটর করিম আহমেদ খান জানিয়েছেন, ৫ দেশের প্রতিনিধিদের এই যৌথ আবেদন গ্রহণ করেছে আইসিসি।

ইসরায়েল আইসিসির সদস্য নয়, এই আদালতকে স্বীকৃতিও দেয়নি এখন পর্যন্ত; তবে ফিলিস্তিন আইসিসির সদস্য।

করিম আহমেদ খান জানিয়েছেন, ২০০২ সালে যে রোমান সংবিধির ওপর ভিত্তি করে আইসিসি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেই সংবিধি অনুযায়ী কোনো সদস্যরাষ্ট্র যদি বাইরের কোনো রাষ্ট্রের হামলার শিকার হয় এবং ওই হামলাকারী রাষ্ট্র যদি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত সনদে স্বাক্ষরকারী কিংবা স্বীকৃতি দানকারী দেশ না ও হয়— তাহলেও ওই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে পারবে আইসিসি।

গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে প্রবেশ করে উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের কয়েক শ’ যোদ্ধা। সেখানে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে সামরিক-বেসামরিক লোকজনদের হত্যার পাশপাশি ২৪২ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিককে জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে যায় তারা।

জবাবে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী। পরে ১৬ অক্টোবর থেকে অভিযানে যুক্ত হয় স্থল বাহিনীও।

হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক। অন্যদিকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গত ৬ সপ্তাহের অভিযানে প্রাণ হারিয়েছেন ১২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। এই নিহতদের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্ক।

গত মাসে গাজা ও মিসরের সীমান্তপথ রাফাহ ক্রসিং পরিদর্শন করতে গিয়ে করিম আহমেদ খান জানিয়েছন, হামাসের গত ৭ অক্টোবরের হামলা এবং ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর অভিযান— দুটি ব্যাপারটি তদন্তের এক্তিয়ার রাখে আইসিসি।

তবে আইসিসি বিশেষজ্ঞদের মতে, শুক্রবার বাংলাদেশসহ ৫টি দেশ যে আবেদন জমা দিয়েছে, বাস্তবে সেটির প্রভাব বেশ সীমিত। কারণ ফিলিস্তিনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের একটি তদন্ত বর্তমানে চলমান আছে। ২০১৪ সালের ১৩ জুন শুরু হয়েছিল এই তদন্ত।

সূত্র : রয়টার্স

এসএমডব্লিউ