ভারতীয় সীমান্তের কাছে সামরিক ঘাঁটিতে বিদ্রোহীদের তুমুল হামলার মুখে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর আরও অন্তত ২৯ সৈন্য ভারতে প্রবেশ করেছেন। ক্ষমতাসীন জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে মিয়ানমারের বিদ্রোহীগোষ্ঠীগুলোর ক্রমবর্ধমান হামলার মাঝে বৃহস্পতিবার ওই সৈন্যরা ভারতে পালিয়ে গেছেন।

এর আগে, চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর মিজোরাম সীমান্ত লাগোয়া ঘাঁটি বিদ্রোহীরা দখলে নেওয়ায় আরও কমপক্ষে ৪৩ সৈন্য ভারতে পালিয়ে যান। তবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কয়েকশ কিলোমিটার পূর্বের একটি ভিন্ন সীমান্ত ক্রসিং পয়েন্ট দিয়ে এই সৈন্যদের মধ্য থেকে অন্তত ৪০ জনকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠায়।

গত কয়েক দশক ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের জাতিগত সংখ্যালঘু ও অন্যান্য বিদ্রোহীগোষ্ঠীগুলোর সাথে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর লড়াই চলছে। তবে ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থান দেশটির জান্তাবিরোধী গোষ্ঠীগুলোর মাঝে নজিরবিহীন সমন্বয় তৈরি করেছে। যে কারণে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সাথে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে সামরিক বাহিনী সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে।

সম্প্রতি দেশটির কয়েকটি এলাকায় বিদ্রোহীদের তুমুল হামলার কবলে পড়েছে সামরিক বাহিনী। বিদ্রোহীরা হামলা চালিয়ে সামরিক বাহিনীর বেশ কিছু নিরাপত্তা চৌকি ও স্থাপনার দখল নিয়েছে। বিদ্রোহীদের হামলা বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারি সব কর্মী ও সামরিক অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন ব্যক্তিদের জরুরি প্রয়োজনে সেনাবাহিনীতে কাজ করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার আদেশ দিয়েছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা।

রাজধানী নেপিদোর প্রশাসনিক পরিষদের সেক্রেটারি টিন মাউং সোয়ে এই তথ্য জানিয়ে বলেছেন, ‘‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং নিরাপত্তার জন্য নিজেদের ইউনিটের বাইরেও কাজ করার প্রয়োজন হতে পারে।’’ আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে রাজধানী নেপিদো ও মধ্যাঞ্চলের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। জরুরি পরিস্থিতিতে সহায়তা করার জন্য এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

সেনাবাহিনীর বিরোধিতায় দেশটির গণতন্ত্রপন্থী রাজনীতিবিদদের গঠিত ছায়া সরকার কিছু বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সাথে জোট গড়ে ‘‘রোড টু নেপিদো’’ অভিযান শুরু করেছে। রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার লক্ষ্যে তারা এই অভিযান শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন।

বুধবার রাতে মিয়ানমার জান্তার মুখপাত্র জ্য মিন তুন বলেছেন, দেশের উত্তর-পূর্বের শান, পূর্বের কায়াহ এবং পশ্চিমে রাখাইন রাজ্যে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর প্রবল আক্রমণের মুখোমুখি হয়েছে সামরিক বাহিনী।

তিনি বলেন, বিদ্রোহীরা সামরিক চৌকিতে শত শত বোমা ফেলার জন্য ড্রোন ব্যবহার করছে। যে কারণে সামরিক কিছু স্থাপনা খালি করা হয়েছে। আমরা ড্রোন বোমা হামলা থেকে সুরক্ষার জন্য জরুরিভিত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস