ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সঙ্গে হামাস প্রধান ঈসমাইল হানিয়া (বামে) -রয়টার্স

নভেম্বরের শুরুতে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সঙ্গে দেখা করেন ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের প্রধান ঈসমাইল হানিয়া। বার্তাসংস্থা রয়টার্স বুধবার (১৫ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ওই বৈঠকে খামেনি হামাস প্রধানক জানিয়ে দেন, ‘ইরান হামাসের হয়ে সরাসরি যুদ্ধ করবে না। কারণ গত ৭ অক্টোবর ইরানকে না জানিয়েই হামাস ইসরায়েলে হামলা চালায়।’

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে হামাস ও ইরানের কয়েকটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, সরাসরি যুদ্ধ না করলেও হামাসকে নীতিগত সহায়তা অব্যাহত রাখার কথা জানান আয়াতুল্লাহ খামেনি। তবে সরাসরি কোনো হস্তক্ষেপ তারা করবেন না।

সূত্রগুলো আরও জানিয়েছে, হামাসের যেসব নেতা ইরান ও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সরাসরি হস্তক্ষেপ চেয়ে প্রকাশ্যে বিভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন— তাদের চুপ করানোর জন্য ঈসমাইল হানিয়াকে চাপ দেন আয়াতুল্লাহ খামেনি।

গত ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে যে ভয়াবহ হামলা চালায়— এতে আশ্চর্য্য হয় হিজবুল্লাহও। সশস্ত্র এ গোষ্ঠীর তিনটি সূত্র জানিয়েছে, যে সময় হামাস ইসরায়েলে হামলা চালাচ্ছিল— তখন তাদের যোদ্ধারা সীমান্ত অঞ্চলগুলোতেও ছিলেন না। হামলার পর দ্রুত তারা বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নেন। হিজবুল্লাহর এক কমান্ডার বলেছেন, ‘আমরা যুদ্ধের মধ্যে ঘুম থেকে ওঠি।’

তবে সরাসরি জড়িত না হলেও যুদ্ধ শুরুর পরের দিন থেকে ইসরায়েলের বিভিন্ন অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালানো শুরু করে হিজবুল্লাহ। এছাড়া ইরাক ও সিরিয়ায় ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো মার্কিন সেনাদের অবস্থান লক্ষ্য করে বিক্ষিপ্ত হামলা চালায়। এতে যোগ দেয় ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরাও। তারা ইসরায়েলে ড্রোন হামলা চালায়।

এছাড়া হামাস ও ইসরায়েলের এ যুদ্ধ ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর সামর্থ্যের বিষয়টিরও এখন পরীক্ষার মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত এসব গোষ্ঠী নিজেদের সমস্যা নাকি যুদ্ধকে প্রাধান্য দেবে সে বিষয়টি নিয়ে দোটানার মধ্যে পড়ে যায়।

পর্যবেক্ষক সংস্থা কার্নিগি মিডেল ইস্ট সেন্টারের হিজবুল্লাহ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মোহানাদ হাগে আলীও বলেছেন, ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা— ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোকে কঠিন অবস্থানে ফেলে দেয়। তিনি বলেছেন, ‘যখন আপনি ভাল্লুককে এ ধরনের হামলা দিয়ে জাগিয়ে তোলেন; তখন আপনার মিত্রদের ঠিক একইভাবে আপনার পাশে দাঁড়ানোর বিষয়টি কঠিন হয়ে যায়।’

ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার মুখে অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়া হামাস এখন আঞ্চলিক মিত্রদের কাছ থেকে সহায়ত চাইছে।

সূত্র: রয়টার্স

এমটিআই