ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) দাবি করেছে, গাজা উপত্যকার আল শিফা হাসপাতালে অভিযান নয়, ‘টার্গেটেড অপারেশন’ চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। আইডিএফের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল পিটার লারনার সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ দাবি করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাতে সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লার্নার বলেন, ‘আমরা আল শিফায় টার্গেটেড অপারেশন্স চালাচ্ছি, এটা ঢালাও অভিযান নয়। সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে হাসপাতালটির নির্দিষ্ট কিছু স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে।’

কী কারণে এই অভিযান চলানো হচ্ছে— সিএনএনের সাংবাদিক অ্যান্ডারসন কুপারের এই প্রশ্নের উত্তরে লেফটেন্যান্ট কর্নেল লারনার বলেন, ‘হামাস অনেক দিন আগেই এই হাসপাতালটিতে গোপন কমান্ড সেন্টার গড়ে তুলেছে এবং আমাদের কাছে খবর ছিল— বেশ কয়েকজন জিম্মিকে সেই গোপন কমান্ড সেন্টারে রাখা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য জিম্মিদের বাড়ি ফিরিয়ে আনা। আমাদের লক্ষ্য হামাসের সেইসব গোপন আস্তানা খুঁজে বের করা, যেসব স্থানে জিম্মিদের লুকিয়ে রেখেছে তারা।’

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী এবং আশ্রয় নেওয়া বেসামরিক লোকজনদের ক্ষয়ক্ষতি না করতে ইসরায়েলি সেনাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দাবি করে লারনার বলেন, ‘আমরা (অভিযান চালানোর) কয়েক দিন আগেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে জানিয়েছিলাম। গত কয়েকদিনে হাসপাতাল থেকে রোগী-শিশুদের বের করার ব্যাপারে আমাদের সেনা সদস্যরা সহযোগিতা করেছে। তাছাড়া অভিযান চলাকালে সেখানে আশ্রয় নেওয়া বেসামরিক লোকজনদের যেন ক্ষয়ক্ষতি না করা হয়— সেই নির্দেশও দেওয়া হয়েছে সেনা বাহিনীকে।’

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত ২টা থেকে গাজা উপত্যকার বৃহত্তম হাসপাতাল আল শিফায় অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি স্থল বাহিনী।

উপত্যকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ও মহাপরিচালক ডা. মুনির আল বুর্শ বলেছেন, অভিযান শুরুর এক ঘণ্টা আগে ইসরায়েলের স্থল বাহিনীর কর্মকর্তারা যোগাযোগ করেছিলেন তার সঙ্গে। তারা বলেছিলেন, আর কিছুক্ষণ পরেই হাসপাতালটিতে অভিযান শুরু হবে।

হাসপাতালটিতে এখনও ৬৫০ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আরও রয়েছেন অন্তত ৫ থেকে ৭ হাজার বেসামরিক ফিলিস্তিনি, যারা ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর টানা বোমা বর্ষণে ঘর-বাড়ি হারিয়ে হাসপাতাল কম্পাউন্ডে আশ্রয় নিয়েছেন।

এছাড়াও হাসপাতালটির ১ হাজারেরও বেশি ডাক্তার-নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী বর্তমানে আটকা পড়েছেন সেখানে।

জ্বালানি ও ওষুধ সংকটের কারণে আল শিফা হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল দু’দিন আগেই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চিকিৎসাধীন রোগীদের মৃত্যু শুরু হয়েছে এবং ইতোমধ্যে হাসপাতাল চত্বরে ১৭৯ জন রোগীকে দাফন করা হয়েছে।