ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে বিমান থেকে আবারও চিকিৎসা সরঞ্জাম ফেলেছে জর্ডান। সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এবং কাতারের সহযোগিতায় সহায়তা প্রদানের এই কাজটি সম্পন্ন করে জর্ডানের সেনাবাহিনী।

এর আগে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহেও ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় বিমান থেকে প্যারাসুটের মাধ্যমে চিকিৎসা সরঞ্জাম পৌঁছে দিয়েছিল জর্ডান। রোববার (১২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় তাদের ফিল্ড হাসপাতালের জন্য চিকিৎসা সহায়তার আরেকটি চালান রয়্যাল এয়ার ফোর্সের একটি বিমান থেকে নিচে ফেলা হয়েছে বলে জর্ডানের সেনাবাহিনী রোববার জানিয়েছে।

জর্ডানের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, গাজায় ফিলিস্তিনিদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে হাসপাতালের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এবং কাতারের সহযোগিতায় চিকিৎসা সরঞ্জাম পৌঁছে দেওয়ার এই অভিযানটি চালানো হয়েছে।

সেনাবাহিনীর বিবৃতির উদ্ধৃতি দিয়ে জর্ডানের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা পেট্রা জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলের ক্রমাগত রক্তক্ষয়ী হামলার মধ্যে প্যারাসুটের মাধ্যমে হাসপাতালে ত্রাণ পাঠানো হয়েছে।

এর আগে জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ গত ৬ নভেম্বর জানান, জর্ডানের বিমান বাহিনী গাজায় জর্ডানের ফিল্ড হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসা ও ফার্মাসিউটিক্যাল সহায়তা পাঠিয়েছে।

সেসময় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘আমাদের বিমান বাহিনীর নির্ভীক সেনারা মধ্যরাতে জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জাম প্যারাসুটের মাধ্যমে গাজায় অবস্থিত জর্ডানের ফিল্ড হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছে। গাজা যুদ্ধে আহত আমাদের ভাই ও বোনদের প্রতি এটি আমাদের দায়িত্ব। আমরা সবসময় আমাদের ফিলিস্তিনি ভাইদের পাশে থাকব।’

অবশ্য জর্ডান কি ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা করে বা আগে থেকে জানিয়ে গাজায় এই চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছে দিয়েছে কিনা সে বিষয়টি নিশ্চিত নয়। কারণ ইসরায়েলের ভয়- গাজায় তাদের অনুমতি ছাড়া ত্রাণ সহায়তা পাঠালে; ত্রাণের আড়ালে অস্ত্র বা প্রতিরক্ষার সরঞ্জাম নিয়ে আসতে পারে হামাস।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এছাড়া ইসরায়েলের এই বিমান হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না গাজার কোনও অবকাঠামো। তারা মসজিদ, গির্জা, স্কুল, হাসপাতাল ও বেসামরিক মানুষের বাড়ি-ঘর সব জায়গায় হামলা চালিয়ে আসছে।

অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় নিহতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ১১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সাড়ে চার হাজারেরও বেশি শিশু। এছাড়া নিহতদের মধ্যে নারীর সংখ্যাও তিন হাজারের বেশি।

এছাড়া গত ৭ অক্টোবর হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ শুরুর পর গাজাকে পুরেপুরি অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরায়েল। যদিও সাম্প্রতিক দিনগুলোতে মিশর সীমান্তবর্তী রাফাহ ক্রসিং দিয়ে পরিমাণে খুবই অল্প জরুরি ত্রাণ গাজায় পাঠানো হচ্ছে।

অবশ্য সেগুলোর ওপরও কড়া নজর রাখছে ইসরায়েল।

টিএম