কৃষ্ণসাগরে বেসামরিক জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে কমপক্ষে একজন নিহত হয়েছেন। রুশ হামলার শিকার ওই জাহাজটি লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী এবং সেটি কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী ইউক্রেনের ওডেসা বন্দরের দিকে যাচ্ছিল।

ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী বন্দর ওডেসায় প্রবেশকারী একটি বেসামরিক জাহাজে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর অন্তত একজন নিহত হয়েছেন বলে ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর মতে, লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী ওই জাহাজটিতে অ্যান্টি-রাডার মিসাইল দিয়ে হামলা করা হয়। হামলায় জাহাজটির ৪৩ বছর বয়সী হারবার পাইলট মারা গেছেন। এছাড়া তিন ফিলিপিনো ক্রু সদস্য এবং একজন বন্দর কর্মীও হামলায় আহত হয়েছেন।

এ ঘটনায় রাশিয়ার পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।

ওডেসার আঞ্চলিক প্রসিকিউটর অফিসের মতে, বুধবার স্থানীয় সময় বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে এই হামলা চালানো হয়। হামলার সময় জাহাজটি নোঙ্গর দিয়ে বাঁধা অবস্থায় ছিল বলে জানা গেছে।

বিবিসি বলছে, হামলায় আহত এক শ্রমিককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ইউক্রেনের অবকাঠামো বিষয়ক মন্ত্রী অলেক্সান্ডার কুবরাকভ সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেছেন, হামলার শিকার জাহাজটিতে করে চীনে লোহা আকরিক পরিবহন করার কথা ছিল।

এর আগে চলতি বছরের মাঝামাঝিতে নিজেদের শর্ত পূরণ না হওয়ায় কৃষ্ণসাগর শস্যচুক্তি থেকে সরে আসার ঘোষণা দেয় রাশিয়া। এক বছর আগে তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে এ চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

চুক্তির মাধ্যমে কৃষ্ণসাগর দিয়ে নির্বিঘ্নে আন্তর্জাতিক বাজারে যেতে পারত ইউক্রেনের খাদ্যশস্য। তবে গত ১৭ জুলাই চুক্তিটির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এরপর রাশিয়া সেটির মেয়াদ বাড়াতে অস্বীকৃতি জানায়।

যদিও রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়ই বর্তমান বিশ্বের প্রধান শস্য রপ্তানিকারক দেশ।

আর এরপর কৃষ্ণসাগরে জাহাজ ঢুকলেই তাতে হামলার ইঙ্গিত দেয় রাশিয়া। চুক্তির মেয়াদ শেষের পর এক বিবৃতিতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ইঙ্গিত দেয়, রাশিয়ার সম্মতি ছাড়া ইউক্রেনের শস্য নিতে, কৃষ্ণসাগরে যদি কোনও জাহাজ প্রবেশ করে তাহলে সেটিতে হামলা চালানো হবে। কারণ এসব জাহাজকে অস্ত্রবাহী হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

আর এরপর থেকেই ইউক্রেনের ওডেসা বন্দরে প্রবেশ করা এবং বন্দর থেকে ছেড়ে যাওয়া জাহাজগুলো রাশিয়ান আক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে। মূলত ইউক্রেন তার বন্দর থেকে জাহাজ আসা-যাওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য অস্থায়ী করিডোর খুলেছে।

টিএম