নিহত আত্মীয়দের জন্য কাঁদছেন গাজাবাসী

ইসরায়েলের চালানো বিমান হামলায় পা হারিয়েছে গাজার খান ইউনিসের ১৩ বছর বয়সী কিশোরী লায়ান আল-বাজ। তীব্র ব্যথা ও যন্ত্রণায় হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছিল লায়ান। হামলায় আহত হওয়ার পর যখন তার পা কেটে ফেলা হয় তখন তাকে ব্যথানাশক ওষুধ দেওয়া হয়। ওষুধের প্রতিক্রিয়া কেটে যাওয়ার পর প্রচণ্ড ব্যথায় কেঁদে ওঠছিল সে।

হাসপাতালের বিছানা থেকে ১৩ বছর বয়সী লায়ান কথা বলে বার্তাসংস্থা এএফপির সঙ্গে। তীব্র ক্ষোভ থেকে এএফপির সাংবাদিককে লায়ান বলে, সে তার হারানো পা ফেরত চায়। সে চায় না বাকিটা জীবন নকল পা দিয়ে চলাচল করুক সে।

লায়ান এএফপি বলেছে, ‘আমি কোনো নকল পা চাই না। আমি চাই তারা আমার পা জোড়া দিক। তারা এটি পারবে না।’

যখনই লায়ান ঘুম থেকে জেগে ওঠে এবং ব্যাথানাশকের প্রতিক্রিয়া শেষ হয়ে যায় তখনই ব্যান্ডেজে মোড়ানো নিজের পায়ের অর্ধেক অংশের দিকে তাকিয়ে থাকে সে।

লায়ানার মা লামিয়া আল বাজ (৪৭) বলেছেন, তার মেয়ে গত সপ্তাহে খান ইউনিসের আল-কারাকারায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় আহত হয়।

ইসরায়েলের বিমান হামলায় লায়ানার পরিবারের চার সদস্য নিহত হন। আর সে পায়ে প্রচণ্ড আঘাত প্রাপ্ত হয়।

লায়ানার মা লামিয়া জানিয়েছেন, বিমান হামলায় তার দুই মেয়ে এবং দুই নাতি নিহত হয়েছে। যার মধ্যে একজন ছিল সদ্যই জন্ম নেওয়া শিশু।

তিনি বলেছেন, ‘তাদের শরীর ছিন্নভিন্ন অবস্থায় ছিল। আমি তাদের মর্গে গিয়ে শনাক্ত করি। আমি খিতামকে শনাক্ত করি তার কানের দুল দেখে। আর ইখলাসকে শনাক্ত করি পায়ের আঙ্গুল দেখে।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে লায়ান সাংবাদিককে জিজ্ঞেস করেছে, ‘আমি কিভাবে স্কুলে ফিরে যাব; দেখব আমার বন্ধুরা হাঁটছে আমি পারছি না।’

খান ইউনিসের ওই হাসপাতালটিতে আহত আরও অনেক শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে। তাদের সবারই কোনো না কোনো আত্মীয় ইসরায়েলের বর্বর বিমান হামলায় প্রাণ হারিয়েছে। হাসপাতালটির ওই ওয়ার্ডটি পুরোটিই মানুষের আহাজারিতে পূর্ণ ছিল।

সূত্র: এএফপি

এমটিআই