ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ফের অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী (আইএএফ)। এই নিয়ে পর পর দুই দিনের অভিযানে ওই শিবিরে নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে অন্তত ১৯৫ জনে।

বুধবার রাতের অভিযানে জাবালিয়ায় অন্তত ৮০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর আগে মঙ্গলবার রাতে জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে অভিযান চালিয়েছিল ইসরায়েলি বাহিনী। 

জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের নিকটস্থ দ্য ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালের পরিচালক ডা. আতেফ আল কাহলৌত মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে জানিয়েছেন, অন্তত ৮০ জনের দেহ এসে পৌঁছেছে হাসপাতালটিতে। এই নিহতদের সবাই শরণার্থী ছিলেন এবং আইএএফের বুধবারের অভিযানে প্রাণ হারিয়েছেন।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, ইসরায়েলের বিমান বাহিনীর অভিযান শেষে উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়েছে শিবিরটিতে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার কিছু ভিডিওচিত্রও ছড়িয়ে পড়েছে। সেসব চিত্রে দেখা গেছে, উদ্ধারকর্মীরা ধংসস্তূপের মধ্যে হতাহতদের খোঁজ করছেন।

মঙ্গলবার রাতের হামলার পর ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ এক বিবৃতিতে বলেছিল, আল জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে হামাসের গোপন কমান্ড সেন্টার রয়েছে এবং হামাসের ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিটের প্রধান মোহাম্মদ  আ’সার সেই শিবিরটিতে অবস্থান করছেন— এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়েছে।

তবে বুধবারের অভিযান নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো বিবৃতি দেয়নি আইডিএফ।

মধ্যপ্রাচ্যের আল আকসা অঞ্চলে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে যে সংঘাত চলছে, তাকে ১৯৫৩ সালের পর ওই অঞ্চলে সবচেয়ে বড় যুদ্ধ বলে জানিয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি বিশ্লেষকরা। গত ৭ অক্টোবর হামাসের অতর্কিত হামলার মধ্যে দিয়ে সূত্রপাত ঘটে এই যুদ্ধের।

সেদিন ভোরে গাজার উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্ত ক্রসিং দিয়ে ইসরায়েলে প্রবেশ করে কয়েকশ প্রশিক্ষিত হামাস যোদ্ধা এবং নির্বিচারে গুলি চালিয়ে শত শত বেসামরিক ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিককে হত্যার পাশাপাশি ২৩৪ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে যায়। এই জিম্মিদের মধ্যে ১৩৮ জনই বাইরের বিভিন্ন দেশের নাগরিক। গত কয়েক দিনে ৫ জন জিম্মিকে মুক্তিও দিয়েছে হামাস।

এদিকে হামাস হামলা চলানোর পর ওই দিন ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী, যা এখনও চলছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা বর্ষণে উপত্যকায় নিহত হয়েছেন  গাজায় এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৮ হাজার ৫২৫ জন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ২১ হাজার ৫৪৩ জন। হতাহত এই ফিলিস্তিনিদের অধিকাংশই নারী-শিশু ও বেসামরিক লোকজন।

সূত্র : সিএনএন, আলজাজিরা

এসএমডব্লিউ