ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকাকে ইসরায়েলের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্বের ‘গোরস্তান’ বানানোর ঘোষণা দিয়েছে উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস। সেই সঙ্গে সামনের দিনগুলোতে কয়েকজন বিদেশি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে এই গোষ্ঠীর সামরিক শাখা আল কাসেম ব্রিগেড।

আল কাসেম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু ওবেইদা মঙ্গলবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে এ সম্পর্কে বলেন, ‘আমরা আমাদের মধ্যস্থতাকারীদের ইতোমধ্যে জানিয়েছি যে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আমরা বেশ কয়েকজন বিদেশি (জিম্মিকে) ছেড়ে দেবো।’

‘আমরা আরও জানিয়েছি যে, এই গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সামরিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের গোরস্তান বানানোর আগ পর্যন্ত আমরা থামব না।’

আবু ওবেইদা এমন সময়ে এই ঘোষণা দিলেন, যখন  গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে ব্যাপক সংঘাত হচ্ছে আল কাসেম ব্রিগেডের যোদ্ধাদের। একই দিন ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর বোমা বর্ষণে প্রায় ধ্বংস্তূপে পরিণত হয়েছে উপত্যকার আল জাবালিয়া শরণার্থী শিবির।  

মধ্যপ্রাচ্যের আল আকসা অঞ্চলে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে যে সংঘাত চলছে, তাকে ১৯৫৩ সালের পর ওই অঞ্চলে সবচেয়ে বড় যুদ্ধ বলে জানিয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি বিশ্লেষকরা। গত ৭ অক্টোবর হামাসের অতর্কিত হামলার মধ্যে দিয়ে সূত্রপাত ঘটে এই যুদ্ধের।

সেদিন ভোরে গাজার উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্ত ক্রসিং দিয়ে ইসরায়েলে প্রবেশ করে কয়েকশ প্রশিক্ষিত হামাস যোদ্ধা এবং নির্বিচারে গুলি চালিয়ে শত শত বেসামরিক ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিককে হত্যার পাশাপাশি ২৩৪ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে যায়। এই জিম্মিদের মধ্যে ১৩৮ জনই বাইরের বিভিন্ন দেশের নাগরিক। গত কয়েক দিনে ৫ জন জিম্মিকে মুক্তিও দিয়েছে হামাস।

এদিকে হামাস হামলা চলানোর পর ওই দিন ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী, যা এখনও চলছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা বর্ষণে উপত্যকায় নিহত হয়েছেন  গাজায় এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৮ হাজার ৫২৫ জন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ২১ হাজার ৫৪৩ জন। হতাহত এই ফিলিস্তিনের অধিকাংশই নারী-শিশু ও বেসামরিক লোকজন।

সূত্র : এএফপি

এসএমডব্লিউ