গাজা উপত্যকার রাফাহতে ইসরায়েলি বোমা হামলায় নিহত এক শিশুকে জড়িয়ে ধরে আছেন এক ফিলিস্তিনি নারী। গত ২১ অক্টোবরের ছবি

টানা তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের সংঘাত চলছে। সংঘাতের শুরু থেকেই অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে নির্বিচারে হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল।

পরিস্থিতি এতোটাই ভয়াবহ যে, ইসরায়েলি হামলায় গাজায় প্রতিদিন হতাহত হচ্ছে ৪২০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি শিশু। এমন তথ্যই সামনে এনেছে জাতিসংঘের শিশু নিরাপত্তা ও অধিকার বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ।

মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় গাজা উপত্যকায় প্রতিদিন ৪২০ জনেরও বেশি শিশু নিহত বা আহত হচ্ছে বলে ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে তিনি বলেছেন, গাজা ছাড়াও পূর্ব জেরুজালেমসহ পশ্চিম তীরে অন্তত ৩৭ শিশু নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। সংঘাতে ৩০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি শিশু নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। আর গাজা উপত্যকায় অন্তত ২০ শিশু বন্দি রয়েছে, তাদের ভাগ্য এখনও অজানা।

রাসেল হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। এবং সংঘাত-শত্রুতা যদি শেষ না হয়, তাহলে আমি এই অঞ্চলের শিশুদের ভাগ্য নিয়ে শঙ্কিত।’

পরে তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে ‘অবিলম্বে’ একটি রেজুলেশন পাস করার আহ্বান জানান। সেখানে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানোর পাশাপাশি গাজায় নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার দাবি এবং অবিলম্বে বন্দি সব শিশুর নিরাপদ মুক্তির বিষয়টি উল্লেখ থাকার কথা জানান ক্যাথরিন রাসেল।

এদিকে মধ্য গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় আরও অন্তত ১৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনি বার্তাসংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, সোমবার রাতে আল-নুসিরাত শরণার্থী শিবিরের একটি আবাসিক কমপ্লেক্সে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ওই ১৪ জন নিহত হন।

হামলার পর ভুক্তভোগীদের দেইর এল-বালাহের আল-আকসা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাদের মৃত ঘোষণা করা হয়। নিহত এসব ফিলিস্তিনি গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চল থেকে পালিয়ে এসে এই ক্যাম্পের একটি ভবনে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

অন্যদিকে সোমবার রাতে ইসরায়েলি এই হামলায় নিহতদের মধ্যে শিশুও রয়েছে বলে একটি মেডিকেল সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে। ওই সূত্রটি জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় নিহত ১৪ জনের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশু রয়েছে।

টিএম