ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের চতুর্থ দফার ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ ও প্রাণহানির মধ্য দিয়ে শনিবার (১০ এপ্রিল) রাজ্যের ৫ জেলার ৪৪টি বিধানসভা আসনে এই ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শনিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৭৬ দশমিক ১৬ শতাংশ।

এর আগে গত ২৭ মার্চ প্রথম দফা, ১ এপ্রিল দ্বিতীয় দফা এবং ৬ এপ্রিল তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। মোট আট দফায় এবার রাজ্যটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আগের তিন দফাতেও অশান্তির একাধিক ঘটনা ঘটেছে।

কিন্তু শনিবার রাজ্যটিতে চতুর্থ দফার ভোটগ্রহণের দিনে সংঘর্ষের পাশাপাশি ঘটেছে প্রাণহানির ঘটনাও। কোচবিহারে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চার জনসহ নিহত হয়েছেন ৫ জন, প্রার্থীর ওপর হামলা, জেলায় জেলায় সংঘর্ষ, অনিয়মের অভিযোগের মধ্যেই সম্পন্ন হয় ভোটগ্রহণ।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনা সত্ত্বেও ভোটদানের হারে শীর্ষে রয়েছে উত্তরবঙ্গের কোচবিহার জেলা। সেখানে ভোট পড়েছে ৭৯ দশমিক ৫৩ শতাংশ। পাশের জেলা আলিপুরদুয়ারে ৭৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ।

অন্যদিকে দক্ষিণাঞ্চলের ৩ জেলার মধ্যে ভোটদানের হারে এগিয়ে হুগলি। সেখানে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৭৫ দশমিক ৯৯ শতাংশ ভোটদাতা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। পাশের জেলা হাওড়াতে ভোটের হার ৭৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ। দক্ষিণ ২৪ পরগনাও ভোটদানের হারে তেমন পিছিয়ে নেই। সেখানে ভোটদানের হার ৭৫ দশমিক ২৯ শতাংশ।

রাজ্যে প্রথম তিন দফার ভোটে বিপুল সংখ্যক ভোটার অংশ নিয়েছিলেন। গত ২৭ মার্চ প্রথম দফার নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৮৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ। ১ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় ৮৬ দশমিক ১১ শতাংশ এবং ৬ এপ্রিল তৃতীয় দফায় ৮৪ দশমিক ৬১ শতাংশ ভোট পড়েছিল। প্রথম তিনটি দফায় বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও বিপুল সংখ্যক ভোটারের উপস্থিতির কারণে সন্তোষ প্রকাশ করেছিল কমিশন।

চতুর্থ দফায় পাঁচটি জেলার ৪৪টি আসনের মধ্যে উত্তরবঙ্গের কোচবিহার জেলার ৯টি এবং আলিপুরদুয়ারের ৫টি বিধানসভা আসনের সব ক’টিতেই ভোটগ্রহণ হয়। এছাড়া দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৩১টি আসনের মধ্যে ১১টি, হাওড়া জেলার ১৬টির মধ্যে ৯টি এবং হুগলির ১৮টির মধ্যে ১০টি আসনেও ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়।

২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে এই ৪৪টি আসনের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে ছিল ৩৯টি। বিজেপি’র হাতে ছিল মাত্র একটি এবং বামদের দখলে ছিল ৩টি আসন। আর তাদের জোট শরিক কংগ্রেসের ঝুলিতে ছিল একটি আসন।

অবশ্য ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের ফলাফলে বিধানসভাভিত্তিক ফলের হিসাব অনেকটা বদলে যায়। এই ৪৪টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ২৫টি এবং বিজেপি ১৯টি আসনে এগিয়ে। তবে সে সময় পৃথক ভাবে লড়াই করা বাম-কংগ্রেসের হাতে কোনো আসনই নেই।

টিএম