হঠাৎ রাশিয়া সফরে হামাসের প্রতিনিধিদল-ইরানের উপপরাষ্ট্রমন্ত্রী
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীনগোষ্ঠী হামাসের একটি প্রতিনিধিদল ও ইরানের উপপরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী বাঘিরি কানি রাশিয়া সফর করছেন। বৃহস্পতিবার রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে তারা পৌঁছেছেন বলে রুশ রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা আরআরএ নভোস্তি জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনি প্রতিনিধিদলের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে আরআইএ নভোস্তি বলছে, হামাসের জ্যেষ্ঠ সদস্য আবু মারজুক মস্কো সফরকারী দলের নেতৃত্বে আছেন। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, হামাসের প্রতিনিধিরা বর্তমানে মস্কোতে রয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, ‘আমি এটা নিশ্চিত করতে পারি যে, সংশ্লিষ্ট ফিলিস্তিনি আন্দোলনের প্রতিনিধিরা মস্কো সফরে আছেন।’ ইসরায়েল, ইরান, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এবং হামাসসহ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দেশ ও সংগঠনের সাথে রাশিয়ার সম্পর্ক রয়েছে।
গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে মধ্যপ্রাচ্যে হামাস-ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক ব্যর্থতা দায়ী বলে মন্তব্য করেছে মস্কো। ইসরায়েল ও হামাসের মাঝে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং এই সংকটের স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে পুনরায় আলোচনা শুরু করার আহ্বান জানিয়েছে রাশিয়া।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী বাঘিরি কানিও এই মুহূর্তে মস্কো সফরে রয়েছেন।
এদিকে, হামাস-ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে অন্যান্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। একই সঙ্গে হামাসের হামলার শাস্তি হিসেবে ফিলিস্তিনি শিশু, নারী ও বয়স্ক নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলাকে ‘অন্যায়’ বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
বুধবার মস্কোতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনে আয়োজিত উচ্চপর্যায়ের সরকারি এক বৈঠকে পুতিন বলেন, ‘এখন আমাদের মূল কাজ বা কর্তব্য হলো (গাজায়) রক্তপাত ও সহিংসতা থামানো। যদি আমরা তা করতে না পারি, তাহলে সামনের দিনগুলোতে এই যুদ্ধ অত্যন্ত বিপজ্জনক ও ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি করবে এবং কেবল মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যেই তা সীমিত থাকবে না, বরং সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলেও এই যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়বে।’
পশ্চিমা বিশ্বের যেসব দেশ যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য ইসরায়েলকে উৎসাহ যোগাচ্ছে, তাদের সমালোচনা করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ইসরায়েলকে উৎসাহ যোগানোর মাধ্যমে তারা আসলে বিশ্বজুড়ে বিশৃঙ্খলা ও পারস্পরিক ঘৃণা ছড়িয়ে দিচ্ছে। বিশ্বের লাখ লাখ মানুষের জাতীয়তাবোধ ও ধর্মীয় আবেগ নিয়ে খেলছে তারা।’
গত ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েলে আকস্মিক হামলার পাল্টায় গাজাজুড়ে বোমা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলমান এই যুদ্ধে ইসরায়েলের হামলায় ৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটেছে। যুদ্ধ শুরুর পরপরই সর্বাত্মক অবরোধ আরোপের ঘোষণা দিয়ে গাজা উপত্যকায় বিদ্যুৎ, পানি ও জ্বালানির সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের টানা হামলার কারণে গাজার প্রায় ১৪ লাখ মানুষ ইতিমধ্যে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল, আলজাজিরা।
এসএস