গাজায় যুদ্ধ নয়, গণহত্যা চলছে: ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা
‘গাজায় যা ঘটছে তা যুদ্ধ নয়, বরং গণহত্যা’ উল্লেখ করে অবিলম্বে এই সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভা। তিনি বলেছেন, গাজায় সংঘাত কোনও যুদ্ধ নয় বরং ‘গণহত্যা’; যা হাজার হাজার শিশুর প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে।
বৃহস্পতিবার ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে ফেডারেশন কাউন্সিলের এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ সম্পর্কে এমন মন্তব্য করেছেন লুলা ডি সিলভা। ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, কাতারের আমির তামিন বিন হামাদ আল-থানির সাথে মধ্যপ্রাচ্যের এই যুদ্ধ কীভাবে থামানো যায়, সেই বিষয়ে টেলিফোনে কথা বলবেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
‘এটা কোনও যুদ্ধ নয়, এটা গণহত্যা। প্রায় ২ হাজার শিশুকে হত্যা করা হয়েছে; যাদের এই যুদ্ধের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই, তারা এই যুদ্ধের শিকার হয়েছে। যুদ্ধের ফলে নিষ্পাপ শিশুরা মারা যাবে, এটা জানার পরও একজন মানুষ কীভাবে যুদ্ধ করতে পারেন, তা আমি সত্যিই জানি না,’ বলেন লুলা।
তিনি বলেন, মিসরের সীমান্ত থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে গাজা উপত্যকায় আটকা পড়া ব্রাজিলীয়দের প্রথম দিকে মুক্ত করে দেওয়া যেতে পারে কি না তা দেখার জন্য কাতারের আমিরের সাথে আমার টেলিফোনে আলোচনা হবে। গাজায় আটকা ব্রাজিলীয়রা দেশে ফিরতে চান।
হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের মাঝে গাজা উপত্যকায় ব্রাজিলের অন্তত ৩০ নাগরিক উদ্ধারের অপেক্ষায় রয়েছেন। তবে মিসরের সাথে সীমান্ত খুলে দেওয়া নিয়ে ইতিমধ্যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট ইসরায়েল, ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ, মিসর, ইরান, তুরস্ক, ফ্রান্স, রাশিয়া এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ কয়েকটি দেশের নেতাদের সাথে চলমান এই সংঘাতের সমাধানে মধ্যস্থতার বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
তিনি বলেছেন, ‘বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে যা ঘটছে তা অত্যন্ত ভয়াবহ। আর এই সংঘাতে কে সঠিক অথবা কে ভুল, কে প্রথম গুলি চালিয়েছে এবং কে পরে গুলি করেছে তা নিয়ে এখন আলোচনার সময় নয়।’
হামাসের হাতে জিম্মিদের মুক্তি এবং গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের কাছে সাহায্য পাঠানোর অনুমতি দেওয়ার জন্য সেখানে একটি মানবিক করিডোর তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন ব্রাজিলের এই প্রেসিডেন্ট।
গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারীগোষ্ঠী হামাসের ইসরায়েলে আকস্মিক হামলার পাল্টায় গাজাজুড়ে বোমা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলমান এই যুদ্ধে ইসরায়েলের হামলায় ৬ হাজার ৫০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটেছে। যুদ্ধ শুরুর পরপরই সর্বাত্মক অবরোধ আরোপের ঘোষণা দিয়ে গাজা উপত্যকায় বিদ্যুৎ, পানি ও জ্বালানির সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের টানা হামলার কারণে গাজার প্রায় ১৪ লাখ মানুষ ইতিমধ্যে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
এসএস