ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামোসের মধ্যে চলমান যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্য ছাড়িয়ে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

সেই সঙ্গে হামাসের হামলার শাস্তি হিসেবে ফিলিস্তিনের শিশু, নারী ও বয়স্ক ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর হামলাকে ‘অন্যায়’ বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

বুধবার মস্কোতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনে আয়োজিত এক উচ্চ পর্যায়ের সরকারি বৈঠকে পুতিন বলেন, ‘এখন আমাদের মূল কাজ বা কর্তব্য হলো (গাজায়) রক্তপাত ও সহিংসতা থামানো।’

‘যদি আমরা তা করতে না পারি, তাহলে সামনের দিনগুলোতে এই যুদ্ধ অত্যন্ত বিপজ্জনক ও ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি করবে এবং কেবল মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যেই তা সীমিত থাকবে না, বরং সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলেও এই যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়বে।’

পশ্চিমা বিশ্বের যেসব দেশ যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য ইসরায়েলকে উৎসাহ যোগাচ্ছে, তাদের সমালোচনা করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ইসরায়েলকে উৎসাহ যোগানোর মাধ্যমে তারা আসলে বিশ্বজুড়ে বিশৃঙ্খলা ও পারস্পরিক ঘৃণা ছড়িয়ে দিচ্ছে। বিশ্বের লাখ লাখ মানুষের জাতীয়তাবোধ ও ধর্মীয় আবেগ নিয়ে খেলছে তারা।’

গত ৭ তারিখে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্ত ইরেজ ক্রসিংয়ে অতির্কিত হামলা চালায় হামাসের কয়েক শ’ প্রশিক্ষিত যোদ্ধা। বুলডোজার দিয়ে সীমান্তবেড়া ভেঙে তারা ইসরায়েলের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে এবং কয়েক শ’ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি দুই শতাধিক ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে যায়।

তার জবাবে সেদিন থেকেই ফিলিস্তিনে অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী। সেই অভিযান এখনও অব্যাহত রয়েছে।

দু’পক্ষের যুদ্ধে গত ১৯ দিনে প্রায় ১ হাজার ৪০০ ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন এবং ফিলিস্তিনে নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬ হাজার ৫০০।

পুতিন অবশ্য শুরু থেকেই এই যুদ্ধের বিপক্ষে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। ইসরায়েলকে বিমান হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে সম্প্রতি হামাসের হামলায় নিহত ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের পরিবার-পরিজনদের স্বান্তনাও জানিয়েছেন তিনি।

বুধবারের বৈঠকে ইসরায়েরেলের প্রতি ফের বিমান হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘একটা ব্যাপারে অবশ্যই আমাদের পরিষ্কার হতে হবে যে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী অপরাধ করলে তার শাস্তি কখনও সাধারণ নিররপরাধ লোকজনকে দেওয়া যাবে না।’  

‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলতে পারে, তবে সেই যুদ্ধের নামে নারী, শিশু ও বয়স্ক লোকজনকে হত্যা করা, দিনের পর দিন লাখ লাখ মানুষকে খাদ্য, পানি, স্বাস্থ্যসেবা ও বিদ্যুৎ থেকে বঞ্চিত করে তাদেরকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া— এসব পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য।’

সূত্র : রয়টার্স

এসএমডব্লিউ