‘আমরা কোরআনে বিশ্বাসী, আপনাকে আঘাত করব না’ বন্দিকে বলেছিল হামাস

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন হামাসের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া ইসরায়েলি বৃদ্ধা ইউচেভড লিফশিচজ
কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় গতকাল সোমবার দুই ইসরায়েলি নারীকে ছেড়ে দিয়েছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। তাদের একজন হলেন ইউচেভড লিফশিচজ। হামাসের কাছ থেকে মুক্তি পাওয়ার পর এ নারীকে তেল আবিবের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আজ মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলনে হামাসের হাতে আটক, সেখানে অবস্থান ও মুক্তির বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি।
৮৫ বছর বয়সী এ নারী জানিয়েছেন, ইসরায়েল থেকে তাকে ধরে গাজায় নিয়ে যাওয়ার সময়টিকে— তার কাছে মনে হয়েছে তিনি নরকের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি তার বর্ণনায় বলেছেন, নিজ এলাকা থেকে একটি মোটরসাইকেলে করে হামাসের যোদ্ধারা তাকে একটি গেটের মধ্য দিয়ে গাজায় নিয়ে যায়। মোটরসাইকেলে করে যাওয়ার কারণে তিনি আঘাতপ্রাপ্ত হন এবং ওই সময় তার শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হচ্ছিল।
তিনি জানিয়েছেন, তাকে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে ভেজা মাঠ দিয়ে কয়েক কিলোমিটার হাঁটিয়ে সুড়ঙ্গের ভেতর নিয়ে যায় হামাসের সদস্যরা।
হামাসের কাছ থেকে মুক্তি পাওয়া এই নারী আরও জানিয়েছেন, হামাসের সদস্যরা তাকে বলেছেন, তারা কোরআনে বিশ্বাস করেন এবং এ কারণে তাকে কোনো ধরনের আঘাত করবেন না। তবে তিনি জানিয়েছেন, তাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। এছাড়া হামাস তার ঘড়ি ও অলংকার নিয়ে গেছে বলে দাবি করেছেন এ নারী।
আরও পড়ুন
তিনি সাংবাদিকদের আরও জানিয়েছেন, তিনিসহ মোট ২৪ জন বন্দিকে সুড়ঙ্গের ভেতর নিয়ে যাওয়া হয়। ওই সুড়ঙ্গের মাটি নরম ও ভেজা ছিল। এর কয়েক ঘণ্টা পর পাঁচ বন্দিকে আলাদা করে হামাস।
তিনি জানিয়েছেন সুড়ঙ্গের ভেতর রক্ষী, প্যারামেডিক এবং একজন চিকিৎসক ছিলেন।
ইসরায়েলি এ বৃদ্ধা জানিয়েছেন, তাদের যে সুড়ঙ্গের ভেতর রাখা হয়েছিল সেটি পরিষ্কার ছিল এবং তিনিসহ অন্য বন্দিরা নরম ম্যাট্রেসের উপর ঘুমিয়েছেন। এছাড়া মোটরসাইকেলে করে যাওয়ার সময় আঘাত পাওয়ায় দুই-তিন দিন পর পর তাকে একজন চিকিৎসক এসে দেখে গেছেন।
বন্দিদশা থেকে মুক্তি পাওয়া এ নারী আরও জানিয়েছেন, তাদের সবদিক দিয়ে খেয়াল রেখেছেন হামাসের যোদ্ধারা এবং খাবার হিসেবে তাদের সাদা চিজ এবং শসা খেতে দেওয়া হয়েছিল। এই একই খাবার হামাসের সদস্যরাও খেয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
সূত্র: বিবিসি
এমটিআই