হামাসের প্রতিষ্ঠার ৩১তম বার্ষিকী উপলক্ষে গাজা শহরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে হামাস যোদ্ধাদের দেখা যাচ্ছে। ছবিটি ২০১৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর তোলা

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে সর্বাত্মক হামলার আগে উত্তর গাজার ইসরায়েলি সীমানার কাছে বিপুল সংখ্যক সৈন্য জড়ো হয়েছে। গাজা ছেড়ে যেতে ফিলিস্তিনিদেরকে দেওয়া আল্টিমেটামও শেষ হয়েছে।

যে কোনও সময় শুরু হতে পারে গাজায় ইসরায়েলের স্থল অভিযান। তবে ইসরায়েলের এই হামলার হুমকিতে ভয় না পাওয়ার কথা জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস।

একইসঙ্গে ইসরায়েলের স্থল আক্রমণের জন্য হামাস প্রস্তুত বলেও জানিয়েছে গোষ্ঠীটি। মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের স্থলপথে হামলার হুমকিতে ভীত না হওয়ার পাশাপাশি হামলার জন্য প্রস্তুত থাকার কথা জানিয়েছেন হামাসের সামরিক শাখার মুখপাত্র আবু ওবাইদেহ। সোমবার তিনি বলেন, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের স্থল আক্রমণের হুমকি আমাদের শঙ্কিত করে না এবং আমরা এর জন্য প্রস্তুত।

টেলিভিশনে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক আক্রমণের পর ইজ্জেদিন আল-কাসাম ব্রিগেড ২০০ জনকে বন্দি করেছে এবং আরও প্রায় ৫০ জন গাজার অন্যান্য প্রতিরোধ দলের হাতে বিভিন্ন স্থানে বন্দি আছে।

আবু ওবাইদেহ বলেন, ‘আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে স্থল আক্রমণ চালানোর বিষয়ে দখলদাররা (ইসরায়েল) যে হুমকি দিয়েছে, তাতে আমরা ভয় পাই না এবং আমরা এর জন্য প্রস্তুত।’

মূলত মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র ধর্মীয় স্থান আল-আকসা মসজিদের পবিত্রতা লঙ্ঘন এবং অবৈধ বসতিস্থাপনকারীদের অত্যাচারের জবাব দিতে গত সপ্তাহে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামের একটি অভিযান চালায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। হামাসের এই অভিযানে কার্যত হতবাক হয়ে পড়ে ইসরায়েল।

হামাসের এই হামলায় নিহত ইসরায়েলিদের সংখ্যা ১৪০০ জনে পৌঁছেছে। নিহতদের মধ্যে ২৮৬ জন সেনাসদস্যও রয়েছে বলে আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে। হামাসের হামলায় আহত হয়েছেন আরও হাজার হাজার ইসরায়েলি। এছাড়া আরও বহু মানুষকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে গেছে হামাস।

পরে হামাসের হামলার প্রতিশোধে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার সীমান্ত প্রাচীরের কাছে অবস্থান নিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর শত শত ট্যাংক। গাজায় অব্যাহত বিমান হামলার মধ্যেই গত শনিবার ট্যাংকগুলো গাজার কাছে নিয়ে আসা শুরু হয়। আশঙ্কা করা হচ্ছে— যে কোনও সময় গাজায় ইসরায়েলের স্থল অভিযান শুরু হতে পারে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি সোমবার বলেছেন, গাজায় ১৯৯ জনের বন্দি থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে ও স্বজনদের অবহিত করতে সক্ষম হয়েছে ইসরায়েল।

আবু ওবাইদেহের মতে, ‘পরিস্থিতি পরিপক্ক হলে আমরা বিদেশি বন্দিদের মুক্তি দেব’। তিনি বলেন, গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় ইসরায়েল থেকে আটক করা অন্তত ২২ বন্দি নিহত হয়েছে।

হামাস কর্মকর্তাদের মতে, গত ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলায় সামগ্রিকভাবে নিহতের সংখ্যা ২ হাজার ৮০০ ছাড়িয়েছে।

টিএম