হামাসের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম মিত্র ইসরায়েলে প্রায় ২ হাজার সৈন্য মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র

হামাসের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম মিত্র ইসরায়েলে প্রায় ২ হাজার সৈন্য মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলে সম্ভাব্য মোতায়েন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রায় দুই হাজার সেনা সদস্যের তালিকা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন এই সংবাদমাধ্যম বলছে, যদি এই সৈন্যদের মোতায়েন করা হয়, তাহলে তাদের যুদ্ধক্ষেত্রে লড়াইয়ের জন্য ব্যবহার করা হবে না। তবে মার্কিন সৈন্যরা ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীকে যুদ্ধের বিষয়ে পরামর্শ ও ইসরায়েলিদের মেডিক্যাল সহায়তা দেবেন।

যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন বারবার বলেছে, ইসরায়েল-হামাসের চলমান যুদ্ধে মার্কিন সৈন্যদের যুদ্ধক্ষেত্রে মোতায়েনের কোনও পরিকল্পনা নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলেছেন, ইসরায়েলের সমর্থনে সম্ভাব্য মোতায়েনের প্রস্তুতি হিসেবে মার্কিন সামরিক বাহিনী প্রায় দুই হাজার সৈন্য নির্বাচন করেছে। তারা বলেছেন, সৈন্যদের পরামর্শ এবং চিকিৎসা সহায়তার মতো মিশনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে কোনো পদাতিক বাহিনীকে মোতায়েনের জন্য প্রস্তুত আদেশে রাখা হয়নি।

দেশটির কর্মকর্তারা বলেছেন, সৈন্যরা বর্তমানে ইউরোপসহ মধ্যপ্রাচ্য এবং এর বাইরে অবস্থান করছেন। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বলছে, যুক্তরাষ্ট্র কোন পরিস্থিতিতে বা কোথায় সেনা মোতায়েন করতে পারে তা স্পষ্ট নয়। তবে ইসরায়েল গাজায় স্থল হামলা শুরু করলে ইসরায়েলি সেনাদের প্রতি পেন্টাগনের সহায়তার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

গত ৭ অক্টোবর হামাসের সাথে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কূটনীতিক অ্যান্টনি ব্লিনকেন গত চার দিন ধরে মধ্যপ্রাচ্য চষে বেড়াচ্ছেন। তিনি আরব বিশ্বের ছয় দেশ জর্ডান, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব এবং মিসর সফর করেছেন। এই সফর শেষে সোমবার ইসরায়েলে ফিরে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সাথে বৈঠক করেছেন তিনি।

তার এই সফরের উদ্দেশ্য গাজার বেসামরিক নাগরিকদের কীভাবে সর্বোত্তম মানবিক সহায়তা এবং বিদেশি নাগরিকদের চলে যেতে দেওয়া যায় সেই বিষয়ে আরব বিশ্বের চিন্তা-ভাবনা শোনা, জানা এবং আলোচনা করা।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরটি এই অঞ্চলকে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বার্তা জানিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে সাজানো হয়। সেই বার্তাটি হল, হামাসের প্রতি ইরানের সমর্থনে বাধা দিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন এই গোষ্ঠীকে দীর্ঘদিন ধরে ইরান অর্থ এবং অস্ত্র সহায়তা দিয়ে আসছে। যুক্তরাষ্ট্র্র ইরানের এই সহায়তা ঠেকাতে চায়।

ইরানের আঞ্চলিক মিত্র হিজবুল্লাহকে লেবানন থেকে ইসরায়েলের উত্তর দিকে আক্রমণ করা থেকে বিরত রাখাও পূর্ব ভূমধ্যসাগরে মার্কিন বিমানবাহী দুটি রণতরীর উপস্থিতিতে পরিষ্কার। এছাড়া উত্তেজনা প্রশমনে মার্কিন কৌশলের আরেকটি অংশ হল ইসরায়েলের প্রতি সংযমের আহ্বান জানানো।

আরব বিশ্বের ছয় দেশ সফরের বিষয়ে জানাতে ইসরায়েলে পুনরায় ফিরে এসেছেন অ্যান্টনি ব্লিনকেন। এর মাধ্যমে ইসরায়েল যেভাবে গাজায় হামাসকে ধ্বংস করতে চাইছে— বিশেষ করে বেসামরিকদের ওপর ইসরায়েলি আক্রমণে এই অঞ্চল কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবে সেই বিষয়ে নেতানিয়াহু প্রশাসনকে ধারণা দেবেন তিনি।

এসএস