হামাসের হামলায় পুড়ে যাওয়া সামরিক গাড়িকে ঘিরে উল্লাস করছে ফিলিস্তিনিরা। গত ৭ অক্টোবরের ছবি

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস দেড় শতাধিক মানুষকে বন্দি করেছে বলে নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। গত সপ্তাহে ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলার পর তাদেরকে আটক করে হামাস।

রোববার (১৫ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে হামাস ইসরায়েলে মারাত্মক হামলা চালানোর পর ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই গোষ্ঠীর হাতে ১৫৫ জন বন্দি হয়েছেন বলে রোববার নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, হামাসের হাতে আটক হওয়া ‘১৫৫ বন্দির’ পরিবারের সাথে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করেছে।

অবশ্য এর আগে দেওয়া পরিসংখ্যানে হামাসের হাতে আটক বন্দির সংখ্যা ১২৬ জন বলে জানানো হয়েছিল।

এদিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) প্রধান জানিয়েছেন, খুব শিগগিরই গাজায় প্রবেশ করবে তাদের সেনারা এবং গাজায় গিয়ে হামাসকে ধ্বংস করবে তারা। রোববার যুদ্ধের সম্মুখভাগে সেনাদের সঙ্গে দেখা করতে যান আইডিএফ প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হেরজি হালেভি। সেখানে গিয়ে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

জেনারেল হেরজি হালেভি সেনাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব হলো এখন গাজায় প্রবেশ করা। সেখানে যাওয়া যেখানে হামাস প্রস্তুতি নিচ্ছে, কাজ করছে, পরিকল্পনা করছে এবং (রকেট) ছুড়ছে। তাদের সব দিক দিয়ে হামলা করুন, প্রত্যেক কমান্ডার, প্রত্যেক সদস্য এবং সবাইকে ধ্বংস করুন।’

‘এক কথায় আমাদের জিততে হবে,’ যোগ করেন হেরজি হালেভি।

মূলত মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র ধর্মীয় স্থান আল-আকসা মসজিদের পবিত্রতা লঙ্ঘন এবং অবৈধ বসতিস্থাপনকারীদের অত্যাচারের জবাব দিতে গত সপ্তাহে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামের একটি অভিযান চালায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। হামাসের এই অভিযানে কার্যত হতবাক হয়ে পড়ে ইসরায়েল।

হামাসের এই হামলায় নিহত ইসরায়েলিদের সংখ্যা ১৪০০ জনে পৌঁছেছে। নিহতদের মধ্যে ২৮৬ জন সেনাসদস্যও রয়েছে বলে আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে। হামাসের হামলায় আহত হয়েছেন আরও হাজার হাজার ইসরায়েলি। এছাড়া আরও বহু মানুষকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে গেছে হামাস।

পরে হামাসের হামলার প্রতিশোধে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার সীমান্ত প্রাচীরের কাছে অবস্থান নিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর শত শত ট্যাংক। গাজায় অব্যাহত বিমান হামলার মধ্যেই গত শনিবার ট্যাংকগুলো গাজার কাছে নিয়ে আসা শুরু হয়। আশঙ্কা করা হচ্ছে— যে কোনও সময় গাজায় ইসরায়েলের স্থল অভিযান শুরু হতে পারে।

তবে ইসরায়েলের ভয়, হামাস যেসব ইসরায়েলিকে ধরে নিয়ে গেছে তাদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে।

টিএম