জরুরি করিডোর চালুর দাবি
গাজার হাসপাতালগুলোতে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর শঙ্কা
উত্তর গাজা উপত্যকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় ফিলিস্তিনিদের গাড়িবহরে ইসরায়েলের বিমান হামলায় শিশুসহ অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনিদের পালিয়ে যাওয়ার জন্য ইসরায়েলের ঘোষিত পথ ধরে চলে যাওয়ার সময় শনিবার ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলার এই ঘটনা ঘটেছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির লাইভ আপডেটের তথ্য অনুযায়ী, গাজার উত্তর থেকে দক্ষিণের দিকে চলে গেছে ৪৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সালাহ আল-দীন সড়ক। ফিলিস্তিনিদের পালিয়ে যাওয়ার অন্যতম প্রধান রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এই সড়কটি। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, এই সড়কে ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
উত্তর গাজা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় ফিলিস্তিনিদের গাড়িতে হামলায় নারী ও শিশু নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে বিবিসি। ঘটনাস্থলের ছবি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে কয়েকজনের বয়স দুই থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে।
এদিকে, গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ ছিটমহলের ভেতরে ‘বিপর্যয়কর’ পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় আহতদের বিদেশে সরিয়ে নেওয়ার জন্য দ্রুত করিডোর চালুর দাবি জানিয়েছেন।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বলছে, ইসরায়েলি হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৩২০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশুও রয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও অনেকে। গাজা থেকে পালিয়ে আসা লোকজনের গাড়িবহরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় হতাহতের এই ঘটনা ঘটেছে।
গত সপ্তাহে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামাসের হামলার পর শুক্রবার গাজা উপত্যকার উত্তরের ১১ লাখ বাসিন্দাদের দক্ষিণ দিকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয় ইসরায়েল। ইসরায়েলের এই নির্দেশের পর গাজার বাসিন্দারা নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ছোটার সময় আক্রান্ত হয়েছেন।
শনিবার আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রেডক্রস বলেছে, ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় গাজার কোনও এলাকাই এখন আর লোকজনের জন্য নিরাপদ নয়। এমনকি হাসপাতালগুলোও হামলার শিকার হওয়ায় সেখানে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানির শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
গত সোমবার ইসরায়েলের সরকার গাজায় সর্বাত্মক অবরোধ আরোপ করে। এর পর থেকে এই উপত্যকায় খাদ্য, ওষুধ, পানি ও বিদ্যুতের সরবরাহ বন্ধ হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়কর পরিস্থিতির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে গাজা উপত্যকা।
ফিলিস্তিনে নিযুক্ত জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ বলছে, গাজায় তাদের আশ্রয় কেন্দ্রগুলো আর নিরাপদ নয়। উপত্যকায় নজিরবিহীন নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
এক বিবৃতিতে ইউএনআরডব্লিউএ বলেছে, যুদ্ধের নীতিমালা রয়েছে। বেসামরিক নাগরিক, হাসপাতাল, স্কুল, ক্লিনিক ও জাতিসংঘের কার্যালয়গুলো কখনও লক্ষ্যবস্তু হতে পারে না।
এক সপ্তাহ ধরে গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ২ হাজার ২১৫ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৮ হাজার ৭১৪ জন আহত হয়েছেন। আর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা এক হাজার ৩০০ ছাড়িয়ে গেছে। আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৪০০ ফিলিস্তিনি।
সূত্র: বিবিসি, আলজাজিরা।
এসএস