লেবাননের ইসরায়েল সীমান্তের ছবি

ফিলিস্তিনের গাজাভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার চলমান ‌‘যুদ্ধে’ এখন পর্যন্ত প্রাণ গেছে পাঁচ শতাধিক মানুষের। এর মধ্যে সশস্ত্র প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাসের হামলায় প্রাণ হারিয়েছে কমপক্ষে ৩০০ ইসরায়েলি।

ইসরায়েলও পাল্টা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে এবার লেবানন থেকে ইসরায়েলে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এমনকি লেবানন থেকে ছোড়া মর্টার শেল আঘাত হেনেছে ইসরায়েলের সামরিক স্থাপনায়।

রোববার (৮ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আরব নিউজ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার লেবানন থেকে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের দিকে মর্টার শেল ছোড়ার খবর দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর রেডিও। লেবানন থেকে ছোড়া সেই গোলা শেবা ফার্মসে অবস্থিত ইসরায়েলি সামরিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে বলে তিনটি নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে।

অবশ্য ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, লেবাননের যেখান থেকে এসব গোলা নিক্ষেপ করা হয়েছে সেই এলাকায় পাল্টা আর্টিলারি হামলা চালাচ্ছে তারা।

এতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি সশস্ত্র বাহিনী (আইডিএফ) বর্তমানে লেবাননের সেই এলাকায় আক্রমণ করছে যেখান থেকে গোলাবর্ষণ করা হয়েছিল। আইডিএফ এই ধরনের আক্রমণের জন্য প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে এবং ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সমস্ত অঞ্চলে এবং প্রয়োজনে যে কোনও সময়ে কাজ চালিয়ে যাবে।’

আল আরাবিয়ার সংবাদদাতার দেওয়া তথ্য অনুসারে, ইসরায়েলি বাহিনী দক্ষিণ লেবাননের কাফার শুবার আশপাশের এলাকা লক্ষ্য করে আর্টিলারি হামলা চালিয়েছে। তবে ইসরায়েলি কামানের গোলাবর্ষণের পরে লেবাননের পক্ষে কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।

সংবাদদাতার মতে, ইসরায়েল লেবাননের সীমান্তে পর্যটন সুবিধা বন্ধ করতে অনুরোধ করেছে।

প্রসঙ্গত, ইসরায়েলের অধীনে থাকা শেবা ফার্মস এলাকাটি হিজবুল্লাহ এবং লেবানন তাদের বলে দাবি করে থাকে। তবে জাতিসংঘের শান্তিচুক্তি অনুযায়ী, শেবা ফার্মস সিরিয়ান গোলান মালভূমির অংশ, যেটি ১৯৬৭ সাল থেকে দখল করে রেখেছে ইসরায়েল। পরে এই অঞ্চলটি ১৯৮১ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত হয়।

এর আগে ইসরায়েলিদের তৈরি অবৈধ বসতিগুলো লক্ষ্য করে আকস্মিক ও অতর্কিত হামলা শুরু করে ফিলিস্তিনের গাজাভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। শনিবার সকাল থেকে চালানো এই হামলায় নিহত ইসরায়েলিদের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩০০।

এছাড়া অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা পরিচালনাকারী গোষ্ঠী হামাসের ভয়াবহ এই হামলায় আহত হয়েছে আরও প্রায় ১৬০০ ইসরায়েলি। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর। আর তাই  মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে হামাসের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলো ইসরায়েলি বন্দিদের গাজা উপত্যকায় জীবিত অবস্থায় ধরে আনার বহু ভিডিও ফুটেজ পোস্ট করেছে। হামাস বলেছে, আটক ইসরায়েলিদের সংখ্যা ইসরায়েল যা জানে তার চেয়েও অনেক বেশি।

ইসরায়েলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, হামলার পর আহতদের চাপ বেড়েছে দক্ষিণ ইসরায়েল ও গাজার সবগুলো হাসপাতালে। তাই এসব হাসপাতালে একটি বেডও ফাঁকা পাওয়া যাচ্ছে না।

অন্যদিকে পৃথক এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছেন, গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ২৩২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১ হাজার ৬৯৭ জন।

টিএম