ভয়াবহ বিপর্যয়ের মধ্যেই পর্যটকদের জন্য দুটি স্পট খুলে দিলো সিকিম
ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত ভারতের সিকিম রাজ্য। চলমান বন্যা পরিস্থিতির মধ্যেই রাজ্যের দুটি অংশ খুলে দেওয়া হয়েছে পর্যটকদের জন্য। এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে সিকিমের পর্যটন বিভাগ। এতে বলা হয়, পর্যটকরা চাইলে দক্ষিণ ও পশ্চিম সিকিমে ঘুরতে পারবেন।
পর্যটন বিভাগের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, হিমালয়ার ছোট্ট পাহাড়ি রাজ্যের ওই দুটি জায়গা আপাতত বিপদ মুক্ত।
বিজ্ঞাপন
এদিকে রাজ্য সরকারের এমন বিজ্ঞপ্তিতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন নামচি, পেলিং, রাবাংলার মতো এলাকার হোটেল ব্যবসায়ীরা। সেইসঙ্গে স্বস্তি ফিরেছে পর্যটকদের একাংশের মধ্যে।
এর আগে হোটেল ব্যবসায়ীরা দাবি করেছিল, পূর্ব ও উত্তর সিকিম বিপর্যয়ে বিধ্বস্ত হলেও পশ্চিম ও দক্ষিণ সিকিমে কিছু হয়নি। তাই সরকারের কাছে তারা দাবি করেছিল, সেখানে যেন পর্যটকদের আসতে বারণ না করা হয়। সরকার এ দাবি মানায় খুশি হোটেল ব্যবসায়ীরা।
প্রসঙ্গত, পূজার আগে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে সংকটে সিকিমের পর্যটন। মূলত পর্যটন ব্যবসার ওপর দাঁড়িয়ে থাকা সে রাজ্যের অর্থনীতিও গ্রাসের মুখে পড়েছে। ইতোমধ্যে ভয়ে সিকিম পাহাড় ছাড়তে শুরু করেছেন পর্যটকরা। এছাড়া বুকিং বাতিলও করা হচ্ছে। পূযাতে এবারও প্রচুর বুকিং রয়েছে সিকিম পাহাড়ে। তবে পর্যটকদের একাংশ বুকিং বাতিল করে টাকা ফেরতের দাবি করায় বিপাকে রয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা জানান, পূযার মৌসুমেই তাদের বাড়তি আয় হয়। সরকার পর্যটকদের না যাওয়ার পরামর্শ দিলে ঘোর বিপদ। এমনিতেই কয়েকদিনের বুকিং বাতিল হয়েছে।
সিকিমের কয়েক লাখ মানুষের রুটিরুজি জড়িয়ে আছে পর্যটনের সঙ্গে। তাদের কেউ গাড়িচালক, কেউ হোটেল মালিক, কেউবা কর্মী। তাদের প্রত্যেকের মনেই ভয় ধরে গিয়েছিল। তবে শুক্রবার সরকারের ঘোষণায় কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছেন তারা।
আরও পড়ুন
অপরদিকে পর্যটকদের যেন কোনও অসুবিধা না হয়, সেদিকে খেয়াল রেখেছে পর্যটন ব্যবসায়ীদের সংগঠন হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড টুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কও। সংগঠনটির তরফ থেকে ত্রাণ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিধ্বস্ত সিকিমে।
গত তিন দিনে তিস্তা নদীতে ২৭টি মৃতদেহ উদ্ধারের পর ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় সিকিমের বন্যায় নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫৩ জনে এবং এখনও নিখোঁজ রয়েছেন দেড় শতাধিক মানুষ। পার্শ্ববর্তী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের তিস্তায়ও যে মিলছে মৃতদেহ। গত ৩ দিনে উদ্ধার ২৭টি মৃতদেহের মধ্যে এ পর্যন্ত ৭ জনের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। পাহাড়ি ঢল ও বন্যায় তিস্তা উপত্যকার অন্তত ১ হাজার ১৭৩টি বাড়িঘর ভেঙে পড়েছে এবং উপদ্রুত বিভিন্ন এলাকা থেকে এ পর্যন্ত উদ্ধার করা হয়েছে ২ হাজার ৪২৩ জনকে। সিকিমের মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে এসব তথ্য।
এমএসএ