চলতি বছরের সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন নরওয়ের নাট্যকার ও ঔপন্যাসিক জন ফসি

চলতি বছরের সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর নরওয়ের নাট্যকার ও ঔপন্যাসিক জন ফসি বলেছেন, সাহিত্যে নোবেল জয়ের বিষয়টি একেবারে অভিভূত হওয়ার মতো। তবে এটা কিছুটা ভীতিকরও বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার নোবেল জয়ের পর ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেছেন তিনি।

কবি হিসেবেও ব্যাপক পরিচিত আছে জন ফসির। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘আমি অভিভূত এবং কিছুটা ভীত। আমি এই পুরস্কারকে সাহিত্যের জন্য এমন এক পুরস্কার হিসেবে দেখি যার প্রথম এবং প্রধান লক্ষ্য কেবল সাহিত্যই।’

নরওয়েজীয় ভাষার লিখিত রূপের দু’টি মানদণ্ড— নাইনর্স্ক এবং বোকমাল। ৬৪ বছর বয়সী ফসি এর মধ্যে নাইনর্স্ককে তার সাহিত্যচর্চায় বেশি ব্যবহার করেন। ফসি বলেন, তিনি নোবেল পুরস্কারকে এই ভাষার স্বীকৃতি এবং প্রচারেরে আন্দোলন হিসেবে বিবেচনা করছেন। ফসি এই পুরস্কারকে উৎসর্গ করেছেন তার সাহিত্যচর্চার হাতিয়ার সেই ভাষার প্রতি।

‘নতুন নরওয়েজীয়’ হিসেবে পরিচিত এবং দেশের জনসংখ্যার মাত্র ১০ শতাংশের ব্যবহৃত ফসির ভাষার রূপটি নরওয়ের উনিশ শতকের গ্রামীণ উপভাষাগুলোর সাথে বিকশিত হয়েছিল। যা এই ভাষাকে প্রভাবশালী ড্যানিশ ভাষার ব্যবহারের বিকল্প হিসেবে হাজির করেছিল।

দুই ডজনেরও বেশি নাটকের পাশাপাশি বিশিষ্ট এই লেখক গত চার দশক ধরে উপন্যাস, প্রবন্ধ, কবিতার সংকলন এবং শিশুদের বইও লিখেছেন। ফসির বইয়ের প্রকাশকের মতে, নরওয়েজীয় এই লেখকের কাজ ৪০টিরও বেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তার লেখা নাটক এক হাজারেরও বেশি প্রযোজনা হয়েছে।

নাটক, উপন্যাস, কবিতা, প্রবন্ধ, শিশুসাহিত্য, অনুবাদ— এক কথায় সাহিত্যের প্রায় সব শাখায় বিচরণ করেছেন জন ফসি। তবে বিশেষ পারদর্শিতা দেখিয়েছেন নাটক ও উপন্যাসে। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন নাট্যশালায় যেসব পশ্চিমা নাট্যকারদের নাটক সবচেয়ে বেশি প্রদর্শিত হয়, জন ফসি তাদের অন্যতম।

সাহিত্যিক থিম হিসেবে অমীমাংসার প্রতি ঝোঁক রয়েছে ফসির। বিশেষ করে তার উপন্যাসের ক্ষেত্রে দেখা যায়— চরিত্রগুলো প্রায় সময়ই এমন পরিস্থিতিতে পৌঁছায়, যার কোনও প্রথাগত সুনির্দিষ্ট সমাধান নেই। ১৯৮৫ সালে প্রকাশ হওয়া তার দ্বিতীয় উপন্যাস ‘স্টেংড গিটার’ থেকে এই থিমে সাহিত্য রচনা শুরু করেন তিনি।

ফসির আগে ১১৩ জন সাহিত্যে নোবেল জয় করেছেন। এই জয়ীদের মধ্যে নারীর সংখ্যা মাত্র ১৭ জন। ফসির পূর্বসূরী অর্থাৎ ২০২২ সালে যিনি নোবেল পেয়েছিলেন, তিনি অবশ্য একজন নারী— ফ্রান্সের সাহিত্যিক অ্যানি এরনাক্স।

সূত্র: রয়টার্স, নোবেল ডট ওআরজি।

এসএস